শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে সরকার আন্তরিক নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে সরকার আন্তরিক নয়

মির্জা ফখরুল ইসলাম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের সংকট নিরসনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। কিন্তু বর্তমান সরকার সে ধরনের কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে মোটেও আন্তরিক নয়। গতকাল সকালে উত্তরায় নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

ক্ষমতাসীনদের ফ্যাসিস্ট উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তির লড়াই সহজ নয়। তবে আমি আশাবাদী, জনগণ একদিন ঘুরে দাঁড়াবে এবং দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। নির্বাচনের জন্য আলোচনায় বসতে সরকারের প্রতি আমরা আবারও আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশে জঙ্গিসহ যেসব সংকট চলছে তা কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে কেটে যাবে। বিএনপি সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সংকট থেকে উত্তরণ হতে হবে। কেননা কেউই চায় না এ দেশ আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া হোক।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল, যারা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এ দেশের রাজনীতিতে শক্ত একটি অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিল। কিন্তু এখন দলটির আচরণ  দেশ, গণতন্ত্র ও সুস্থ রাজনৈতিক ব্যবস্থাবিরোধী।’ আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন এ  দেশে আমরা যে কথা বলছি, এটাই তো বিশাল ব্যাপার। আপনারা কতটুকু লিখতে পারছেন আমরা দেখছি। আওয়ামী লীগের ব্যাপারে কিছু লেখেন না আপনারা। কারণ লিখতে পারেন না। আই ডোন্ট ব্লেম ইউ (আমি আপনাদের দোষ দিচ্ছি না)। আপনারা পারেন না। সেই পরিবেশ নেই। তুমি জনগণের কাছে থাকতে চাও, তুমি যদি জনগণকে নিয়ে সব সমস্যা মোকাবিলা করতে চাও, জঙ্গিবাদ দমন করতে চাও, অবশ্যই বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে করত হবে।’ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পদক প্রত্যাহার কিংবা মাজার সরিয়ে নেওয়াকে ‘ষড়যন্ত্র’ ও সরকারের নিচু মানসিকতার পরিচয় বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধের রায় ফাঁসের ঘটনায় সাইবার ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে তার আইনজীবীর সাজার আদেশ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা আলমগীর। তিনি বলেন, ‘ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামকে ১০ বছর জেল দিয়েছে কালকে আইসিটি মামলায়। অপরাধ কী? সত্য কথা বলার অপরাধ। সত্য কিছু কাগজ তিনি তুলে ধরেছেন। এটাই আজকে অপরাধ।’ দেশে ‘বাকস্বাধীনতা নেই’ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৩৫টা অনলাইন বন্ধ করে দিল এক কথায়, এক মুহূর্তের মধ্যে! এটা একটা গণতান্ত্রিক দেশ? কীভাবে, বলেন? কোন পথে, বলেন?’ বিভিন্ন ঘটনায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার সমালোচনা করে ভারতের পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টানেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘জওয়াহেরলাল ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা কাশ্মীর নিয়ে কিছু বলল। সরকার কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করল। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিল যে, কথা বললেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা হয় না। তাকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে, যুদ্ধ করতে হবে, তাহলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার পর্যায় পড়ে।’

সর্বশেষ খবর