সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া

বাদল নূর

চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া

শেখ শহীদুল ইসলাম

সরকারের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেছেন, ‘দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জোট গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত হয়েছে। আমি মনে করি, দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।’

গতকাল রাজধানীর গুলশানের কার্যালয়ে শেখ শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।

শেখ শহীদের মতে, বর্তমানে দেশ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। রাজনৈতিকভাবে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার চ্যালেঞ্জ সরকারকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তাছাড়া একের পর এক জঙ্গি হামলার ঘটনা তো ঘটছেই। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ কেবলমাত্র অধিকারই নয়, এটা তাদের দায়িত্বও বটে। কিন্তু আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলগুলো অধিকার চাইলেও দায়িত্বশীল হয় না। এ ছাড়া রাজনৈতিক নেতাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধার ঘাটতিও আছে। নেতাদের অধিকাংশের পরমত সহিষ্ণুতার অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপিসহ বেশকিছু দলের গত নির্বাচন বর্জন পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সহিংসতা গণতন্ত্রকামী যে কোনো লোককেই ভাবিয়ে তুলবে। একই সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের ভিন্নমত এবং সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতাও গড়ে তুলতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুপ্রিমকোর্টের একজন বিচারপতিকে প্রধান করে সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি গঠন সঠিক পদক্ষেপ। এক্ষেত্রে একটি আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে, যেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের যোগ্যতা সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা থাকবে। এ সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে তা ভারত বা অন্য কোনো দেশের নির্বাচন কমিশনের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। সুতরাং নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে কি না তা নির্ভর করে ওই কমিশনের ক্ষমতা প্রয়োগের ওপর। তার মতে, নির্বাচন কমিশন যে ক্ষমতা পেয়েছে তা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যথেষ্ট। এখন তারা সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করছে কি না তা-ই হলো প্রশ্ন। কেবল আইন করে অধিক ক্ষমতা দেওয়া হলেই নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ করা যাবে না। বরং যারা এসব পদে আসবেন, তাদের ক্ষমতা প্রয়োগের দক্ষতা ও সাহসিকতার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। শেখ শহীদ বলেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনের এখনো দুই বছরের অধিক সময় বাকি। এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হোক এবং তাতে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ জাতি কামনা করে। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি জনগণের সম্পৃক্ততায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এদের অর্থের জোগানদাতাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। মূলত অর্থদাতারাই জঙ্গিবাদের মদদদাতা। এদের ধ্বংস করতে হবে। কেবল হামলাকারীদের হত্যা বা আটক করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।

সর্বশেষ খবর