মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
গুলশানে জঙ্গি হামলা

হাসনাত জড়িত কিনা নিশ্চিত নয় পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাসনাত জড়িত কিনা নিশ্চিত নয় পুলিশ

গুলশান হামলায় হাসনাত করিম জড়িত কি-না, এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নয় পুলিশ। এ ছাড়া সদ্য জামিন পাওয়া তাহমিদের জড়িত থাকারও কোনো প্রমাণ মেলেনি। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম গতকাল এসব তথ্য দিয়ে বলেছেন, হাসনাত করিমকে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (টিআইএস)  সমন্বিতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। ওই প্রতিবেদন ও গুলশান হামলা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দি মেলানোর পরই বলা যাবে তিনি জড়িত কি-না। গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট প্রধান আরও বলেন, আইএস’র পক্ষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ যে ভিডিও প্রকাশ করা হয় তা ছিল এডিট করা। ভিডিওতে সিরিয়ার যে ছবি দেখানো হয়েছিল তা সূক্ষ্মভাবে যুক্ত করা হয়। আর ভিডিওতে যিনি কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি হলেন নিউ জেএমবির সদস্য তাহমিদ রহমান সাফি। সাবেক নির্বাচন কমিশনার শফিউল আলমের ছেলে সাফি তার স্ত্রীসহ নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় দেড় বছর ধরে। পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, সাফি বর্তমানে সিরিয়ায় রয়েছেন। দেশে ফিরলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে। তিনি বলেন, ভিডিওটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এটির যে ব্যাকগ্রাউন্ড পরে যুক্ত করা হয়েছে। এর আগে গত ৫ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলাকারীদের প্রশংসা করে আইএসের নামে যে ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়, সেটিতেও সাফি অংশ নিয়েছিল। তখনই তার পরিচয় জানা যায়। আর সেটিরও ব্যাকগ্রাউন্ডও এডিট করে বসানো হয়েছিল। মনিরুল ইসলাম জানান, সাফি গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল থেকে এসএসসি এবং নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। পরে সে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে। সে ক্লোজ-আপ ওয়ানের সিজন ওয়ানের একজন উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগী ছিল। হাসনাত করিম এবং সদ্য জামিন পাওয়া তাহমিদ হাসিব খানের প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেছেন, গুলশানের হামলার সঙ্গে তাহমিদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে তথ্য গোপন ও অসহযোগিতার কারণে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। আদালত তাকে জামিন দিয়েছে। তবে ভবিষ্যতে তদন্তে তাহমিদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আবারও তাকে গ্রেফতার করা হবে। আপাতত তাকে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, গুলশান হামলার পরিকল্পনাকারী ও মাস্টারমাইন্ডদের মধ্যে কেউ কেউ ইতিমধ্যে অভিযানে নিহত হয়েছেন বা আত্মহত্যা করেছেন। পলাতক মারজান, জাহাঙ্গীর ওরফে রাজীব এবং চকলেট ওরফে বাসার উজ জামানকে গ্রেফতার করতে পারলে এ ঘটনার পুরো রহস্য উন্মোচিত হবে। এরই মধ্যে আজিমপুরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত তানভীর কাদেরীর ছেলে রাসেল পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ওই জবানবন্দির মাধ্যমে গুলশান হামলা সম্পর্কে কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কল্যাণপুরের অভিযানে আহত রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার জবানবন্দিতে আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে। মনিরুল ইসলাম বলেন, অস্ত্র কার কাছে এসেছে, কীভাবে এসেছে, সেটা জানতে পেরেছি। কিন্তু নেপথ্যে ব্যক্তি কে, তা এখনো বের করা সম্ভব হয়নি। গুলশান হামলার জন্য তৃতীয় একটি দেশ থেকে ভারত হয়ে দুই ধাপে প্রায় ২০ লাখ টাকা এসেছিল। আর সেই টাকা গ্রহণ করে চকলেট ওরফে বাসার উজ জামান।

সর্বশেষ খবর