শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

‘ভয়ের টেস্ট’র প্রথম দিনটা বাংলাদেশের

মেজবাহ্-উল-হক, চট্টগ্রাম থেকে

‘ভয়ের টেস্ট’র প্রথম দিনটা বাংলাদেশের

ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুকের টস জয়ে দিনের শুরুতে যে বিপর্যয়ের পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছিল দিন শেষে তা মিথ্যা প্রমাণিত হলো। প্রমাণ করলেন এক অভিষিক্ত স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ‘টসই ম্যাচের ভাগ্য-ত্রাতা’ এমন ধারণাকে রীতিমতো উড়িয়ে দিলেন ইংল্যান্ডকে নিজের স্পিন-বিষে নীল করে দিয়ে। ১৯ বছর বয়সী মেহেদী ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনকে যেমন নিজে স্মরণীয় করে রাখলেন তেমনি এগিয়ে রাখলেন বাংলাদেশকেও।

দিন শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ২৫৮/৭। দিনের শুরুর কথা ভাবলে দিন শেষে এই স্কোর মোটেও খারাপ নয়। মাত্র ২১ রানেই চার উইকেট পতন। তারপর ১০৬ রানে পঞ্চম উইকেট নেই। তখন কে ভেবেছিল এই দলটিই সারা দিন ব্যাট করতে পারবে? কিন্তু মঈন আলী ও বেয়ারস্ট্রর হাফ সেঞ্চুরিতে দলটি ঘুরে দাঁড়ায়। আউট হওয়ার আগে মঈন করেন ৬৮ এবং বেয়ারস্ট্র ৫২। দুই ব্যাটসম্যানই পেয়েছেন ভাগ্যের ছোঁয়া। এক মঈনের পক্ষেই পাঁচ পাঁচটি রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত এসেছে। লঙ্কান আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা তো তিনবার ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে আউটের সিদ্ধান্তই দিয়েছিলেন। কিন্তু মঈনের যে কই মাছের প্রাণ! তিনবারই রিভিউ নিয়ে সফল। তিনবারই বোলার ছিলেন সাকিব আল হাসান। স্পিনার তাইজুল ইসলামের বলেও মঈনকে আউট করার জন্য দুবার রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন মুশফিক। আর শুরুতেই স্লিপে বেয়ারস্ট্রর ক্যাচ মিস করেন সাব্বির রহমান। মঈন-বেয়ারস্ট্রর  ৮৮ রানেই জুটিই ইংল্যান্ডকে কিছুটা আলোয় পথ দেখায়। তবে এই জুটির দুই ব্যাটসম্যানকেই  থামিয়ে দিয়েছেন মেহেদী। যেন থামিয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডকেই। তা না হলে কেন, ইংলিশদের ক্রিকেটাতিহাসে এশিয়ার মাটিতে সবচেয়ে বাজে শুরু হবে কাল। এর আগে কখনো উপমহাদেশে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২১ রানে তিন উইকেট হারাতে হয়নি ইংল্যান্ডকে। সফরকারীদের পতন ঘটা সাত উইকেটের মধ্যে পাঁচটিই নিয়েছেন মেহেদী। বাকি দুটি নিয়েছেন সাকিব। বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সে  অভিষেকে পাঁচ উইকেট নিয়ে মেহেদী অনন্য এক রেকর্ডের মালিক হয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন।  মেহেদীর সঙ্গে গতকাল অভিষেক হয়েছে ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান ও পেসার কামরুল হাসানের। সাব্বিরের পরীক্ষা এখনো শুরুই হয়নি। তবে কামরুল ৮ ওভার করেও নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। চট্টগ্রামের উইকেটের যে অবস্থা তাতে পেসারদের সফল হওয়াটা দুরূহ ব্যাপারই বটে! কেননা আরেক পেসার শফিউল ৯ ওভারে উল্লেখযোগ্য কোনো ডেলিভারি দিতে পারেননি। উইকেটের যে অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, দুই পেসারকে কেবল দল ভারী করার জন্যই নেওয়া হয়েছে। মূল কাজটা স্পিনারদেরই করতে হবে।

সর্বশেষ খবর