শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মাঠ গোছাচ্ছে জাতীয় পার্টি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

মাঠ গোছাচ্ছে জাতীয় পার্টি

একক নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচনী মাঠ গোছাচ্ছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গত ১ অক্টোবর সিলেটের রেজিস্ট্রি মাঠে বিভাগীয় সমাবেশের  মধ্যদিয়ে এ আয়োজন শুরু করেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে আগামী ২৬ নভেম্বর রংপুরে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আর ৩ ডিসেম্বর বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশ সফর শেষে আগামী ১ জানুয়ারি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ঢাক দেবেন এইচ এম এরশাদ। এদিকে পার্টির চেয়ারম্যান এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য এ বয়সেও সারা দেশ ঘুরে দলকে সংগঠিত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেলেও সরকারে থাকা পার্টির অধিকাংশ মন্ত্রী, সংসদ সদস্যরা ব্যস্ত সরকারি দলের তোষণে। তাদের উপলব্ধি আগামীতেও আওয়ামী লীগের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবং আওয়ামী লীগই সরকার গঠন করবে তাই আওয়ামী লীগ যেভাবে চাইবে জাতীয় পার্টি সেভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবে। এ প্রসঙ্গে দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আগামী নির্বাচনে কীভাবে ভালো করা যায়, কীভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ক্ষমতায় যাওয়া যায়, সেই পরিকল্পনা মাথায় নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। আমাদের নেতা এরশাদ। তিনি এই বয়সেও একজন তরুণের মতো সারা দেশ চষে বেড়াচ্ছেন। আমরাও তার সঙ্গে সারা দেশ ঘুরছি। কারণ আমাদের লক্ষ্য জাতীয় পার্টিকে তৃণমূল পর্যায়ে আরও সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী করা। জনগণের রায় নিয়ে এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়া।

জানা যায়, রংপুর এবং বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশেও এইচ এম এরশাদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। পর্যায়ক্রমে সবকটি বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবেন। বিভাগীয় সমাবেশের পাশাপাশি আগামী ১ জানুয়ারি রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের আয়োজন করবে জাতীয় পার্টি। লক্ষাধিক লোকসমাগমের টার্গেট নেওয়া হয়েছে ওই মহাসমাবেশে। এর আগে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী এবং মানিকগঞ্জে জনসভার আয়োজন করবে জাতীয় পার্টি। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের উদ্যোগে দুটি সমাবেশ আয়োজনেরও পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টামণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যসহ অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের সমন্বয়ে এরই মধ্যে ৪০টি টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের কোথায় কী অবস্থা, তা খুঁজে বের করার পাশাপাশি কী ব্যবস্থা নিয়ে দল সংগঠিত হয়—এই টিমকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব জেলায় দীর্ঘদিন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না সেগুলোতে সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কুষ্টিয়া এবং ঝালকাঠিতে সম্মেলন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এইচ এম এরশাদের উপদেষ্টা কাজী মামুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই। দেখতে দেখতেই সময় ঘনিয়ে আসবে। তাই যে সময়টুকু পাওয়া যায় তা আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাই, যাতে নির্বাচনের আগেই তৃণমূল পর্যায়ে দলকে সংগঠিত করে পুরোমাত্রায় নির্বাচনের জন্য তৈরি করা যায়। তিনি আরও বলেন, আমাদের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য আর তা হচ্ছে আগামী নির্বাচনে যে কোনো মূল্যে ভালো ফলাফল অর্জন করা। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক পার্টির এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান একক নির্বাচনের জন্য সারা দেশ চষছেন। আর দলের মন্ত্রী, এমপি ও শীর্ষ নেতারা ব্যস্ত সরকারি দলের দালালি করে আগামীতেও মন্ত্রী-এমপি হতে। তিনি বলেন, গত নির্বাচনে যেমন পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচনের বাইরে ছিলেন। অথচ রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। আগামী নির্বাচনেও হয়তো পার্টির চেয়ারম্যান না চাইলেও দলের বিরোধী অংশটির চাপে নির্বাচনে যেতে হতে পারে।

সর্বশেষ খবর