শিরোনাম
শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
আরাফাতের মৃত্যুবার্ষিকী

‘যুক্তরাষ্ট্রের সব প্রেসিডেন্টই এক’

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

‘যুক্তরাষ্ট্রের সব প্রেসিডেন্টই এক’

স্বাধীনতাকামী  ফিলিস্তিনবাসীর মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম নেতা মহানায়ক ইয়াসির আরাফাতের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। নিপীড়িত জনগণের মুক্তির প্রতীকএ নেতা ২০০৪ সালের আজকের দিনে মৃত্যুবরণ করেন। দিনটি উপলক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ফিলিস্তিনের জন্য সব মার্কিন প্রেসিডেন্টই এক। ডোনাল্ড ট্রাম্পই হোক, আর হিলারি ক্লিনটন, তারা সবাই বারাক ওবামার মতো ইসরায়েলকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাবেন। তাদের নিপীড়ক-নীতি বদলাবে না। তারা পশ্চিমাদের সঙ্গে নিয়ে ফিলিস্তিনবাসীর ওপর ইসরায়েলের অত্যাচারকে সমর্থন দিয়েই যাবেন। বারিধারার ফিলিস্তিন দূতাবাসে এসব কথা বলেন ইয়াসির আরাফাতের একসময়ের সহযোদ্ধা এস ওয়াই রামাদান। সৈনিক থেকে কূটনীতিকের দায়িত্বে আসা এস ওয়াই রামাদান বলেন, ‘ফিলিস্তিন আরব

ভূখণ্ডের একটি অংশ। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। মুসলিম উম্মাহর জন্য এটি একটি পবিত্র স্থান। অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন কাটছে ফিলিস্তিনের নাগরিকদের। বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সময় ধরে তাদের এ দুর্ভোগ ভোগ করতে হচ্ছে। এর জন্য যে শুধু ইসরায়েল বা কয়েকজন ইহুদি দায়ী তা নয়, এর জন্য দায়ী যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা। কারণ তারাই ইসরায়েলকে টিকিয়ে রেখেছে এবং বিভিন্নভাবে শক্তিশালী করেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। এই পরাক্রমশালী অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে একদিন আমরা সফল হবই। মহানায়ক ইয়াসির আরাফাত আমাদের অনুপ্রেরণা।’ ফিলিস্তিনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ দলমত নির্বিশেষে ফিলিস্তিন ও ইয়াসির আরাফাতকে ভালোবাসেন। এটা শুধু এখানকার মুসলিমরা নয়, অন্য ধর্মের লোকেরাও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। এমনকি অনেক বাংলাদেশি ফিলিস্তিনের হয়ে যুদ্ধও করেছেন। বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে এ সুসম্পর্কের ভিত্তি তৈরি হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়। ইয়াসির আরাফাত ও শেখ মুজিবুর রহমান দুজনের বয়স ছিল একই। দুজনই দেশের জন্য জেল খেটেছেন। লড়াই করেছেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতেও  ফিলিস্তিন এবং ইয়াসির আরাফাতের প্রসঙ্গ আছে। বঙ্গবন্ধু সেখানেও ফিলিস্তিনের কথা লিখেছেন। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতেও আমাদের দুই দেশের এমন গভীর সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে আমার বিশ্বাস।’ তিনি বলেন, ইয়াসির আরাফাত বিশ্বের এক অনন্য নেতা। তিনি  জীবন ও মৃত্যুকে কখনোই ভয় পাননি। ছিলেন ভবিষ্যত্দ্রষ্টা। ভবিষ্যতে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা অনুধাবন করতে পারতেন ইয়াসির আরাফাত। স্বভাবে দৃঢ়চেতা হলেও শিশুদের জন্য ছিল তা অপার ভালোবাসা ও স্নেহ। শিশুদের যে কোনো কষ্ট দেখলেই তার চোখে পানি চলে আসত।

সাক্ষাৎকারে আলোচনা প্রসঙ্গে উঠে আসে ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির প্রসঙ্গ। সাফাদির সঙ্গে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর বৈঠক প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেন, ‘একটি হীন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাফাদি নানা কর্মকাণ্ড করছিলেন। এমনকি একটি বানোয়াট সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এই সাফাদি প্রধানমন্ত্রীর ছেলের সঙ্গে বৈঠকের দাবিও তুলেছিলেন। আমাদের গোয়েন্দারা এসব বিষয়ে অনুসন্ধান করেছেন। ফিলিস্তিন নিশ্চিত যে, সাফাদি মিথ্যা দাবি করেছেন। অবশ্য সাফাদি যে সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন, সেই ভিডিও দেখলেই বোঝা যায় এটি বানানো।’

সর্বশেষ খবর