শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাল্যবিয়ে আইন প্রত্যাখ্যান করছি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাল্যবিয়ে আইন প্রত্যাখ্যান করছি

সুলতানা কামাল

মানবাধিকার কর্মী ও ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ’ কমিটির চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ ১৮ এর নিচে মেয়েদের বিবাহ দেওয়া যাবে এমন বিধান রেখে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৬’ নামের যে আইন করা হচ্ছে তা সাংঘর্ষিক। মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত এ আইন আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। অবিলম্বে এ আইন পরিবর্তনের দাবি করছি। কেননা  বাল্যবিবাহ ক্রমশ বাড়ছে, কমছে না। এমতাবস্থায় এ আইনের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ রোধ নয় বরং আরও বাড়বে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সুলতানা কামাল বলেন, মেয়েরা সাধারণত ১২ বছর বয়স থেকেই গর্ভধারণের উপযুক্ত হয়। তাহলে যে মেয়েটি অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে ১৪ বছর বয়সে গর্ভধারণ করবে। সেখানে এ আইন কী ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া আইনের মধ্যে নানা ধরনের জটিলতা রয়েছে। ফলে মেয়েদের জীবনে সুরক্ষার ফলে আরও বেশি দুর্ভোগ নেমে আসছে। রিশা, শারমিন ও তনুর ঘটনা উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, বখাটেদের কারণে প্রতিদিন কোথাও না  কোথাও ঝরে যাচ্ছে নারীর জীবন। এ ছাড়া নারীর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু নারীরা যদি প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন তাহলে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাওয়া উপহাসে পরিণত হবে। এ ছাড়া তিনি পুরস্কার  পেয়েছেন নেতা হিসেবে, বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে। আর এ যদি অবস্থা হয় তাহলে আমরা জবাবদিহি করছি কার কাছে? আমরা অবিলম্বে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় পা হারানো বাবার কন্যা শারমিন ও বখাটের হাতে মৃত্যুবরণ করা রিশার বাবা রমজান হোসেন। শারমিন বলেন, ‘আমার কারণে বাবা তার পা হারিয়েছেন। আমার জন্য পরিবারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বখাটেদের প্রতিবাদ করায় বাবা আজ হাসপাতালের  বেডে শুয়ে কাঁদছেন। তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব বখাটের শাস্তি দাবি করছি। রমজান হোসেন বলেন, বখাটের কারণে আমি  মেয়েকে হারিয়েছি। কিন্তু এখন কি শেষ অবধি মেয়ে হত্যার বিচারও পাব না? আমি চাই বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বখাটেদের বিচার করা হোক। এমন শাস্তি দেওয়া হোক যেন ভবিষ্যতে আর কোনো  মেয়েকে কেউ অত্যাচার করতে সাহস না পায়।

সর্বশেষ খবর