সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিশেষ ধারা বহাল থাকলে আদালতে যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশেষ ধারা বহাল থাকলে আদালতে যাব

ধর্ষণ, পারিবারিক নির্যাতন এবং সামপ্রদায়িক সংঘাতের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। গত বছর এবং চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ২২ মাসে ৯ হাজার ৬৩৬ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছে। ২০১৫ সালে সামপ্রদায়িক সংঘাতে এক হাজার ৪৫৬ জন নারী সহিংসতার শিকার হন। আর এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত এমন সহিংসতার ঘটনা ঘটে এক হাজার ৩৩১টি। গতকাল জাতীয়  প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা পরিস্থিতি ২০১৫-২০১৬’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির (বিএনডব্লিউএলএ) নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত নারীর প্রতি সহিংসতা সংক্রান্ত জরিপ ২০১৫ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বিবাহিত নারীদের ৮০ শতাংশই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে নিজের স্বামীর শারীরিক, মানসিক কিংবা অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ওই জরিপের তথ্য অনুযায়ী মাত্র ২৩ শতাংশ নারী তার নির্যাতনের কথা প্রকাশ করেন এবং মাত্র ৩ শতাংশ নারী আইনি সহায়তার জন্য যোগাযোগ করেন। গত বৃহস্পতিবার ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৬’ এর যে খসড়া মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে, এতে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছরই থাকছে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ‘সর্বোত্তম স্বার্থে’ আদালতের নির্দেশে এবং মা-বাবার সম্মতিতে যে কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিয়ে হতে পারে। জাতীয় সংসদে বিশেষ ধারা বহাল রেখে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন পাস করা হলে এর বিরুদ্ধে আদালতে যাব, মামলা করব জানিয়ে সালমা আলী বলেন, এত প্রতিবাদ করার পরও বিশেষ ধারা বহাল রাখা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিশেষ ধারা রেখে আইন হলে আইনের অপব্যবহার হবে। তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। সংসদে আইন পাসের আগে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে বসবেন বলে আশা করছি। আমরা বিশেষ ধারা বহাল রেখে আইন হলে তা মানব না। দেশের কিশোরীরাও তা মেনে নেবে না। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজা পারভিন, পরিচালক (লিগ্যাল) তৌহিদা খন্দকার, প্রকল্প ব্যবস্থাপক মিতালী জাহান, কেস ম্যানেজার ফাহমিদা আক্তারসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ধর্ষিত হন এক হাজার ৬৯ নারী। এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত এমন পাশবিকতার ঘটনা ঘটে ৮৬৭টি। গত বছর পরিবারে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে ৯৯৬টি। এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পরিবারে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে ৬৯০। বাকি যেসব সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে রয়েছে- যৌন হয়রানি, ফতোয়ার মাধ্যমে আঘাত, এসিড সন্ত্রাস, পাচার, অপহরণ, নিখোঁজ, যৌতুকের জন্য নিপীড়নসহ অন্যান্য নির্যাতন। এ ছাড়া গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুণ হারে গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

সর্বশেষ খবর