শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কূটনীতিক বহিষ্কার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তাপ

প্রতিদিন ডেস্ক

কূটনীতিক বহিষ্কার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তাপ

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হ্যাকিংয়ের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৫ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার ও অবরোধ আরোপের জবাবে রাশিয়া এখনই কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং রাশিয়া এ ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বরাত দিয়ে রুশ রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা স্পুটনিক গতকাল জানিয়েছে। পুতিনের বরাত দিয়ে স্পুটনিকের খবরে বলা হয়েছে, ‘মার্কিন কূটনীতিকদের জন্য আমরা সমস্যা তৈরি করতে চাই না। আমরা কাউকে ফেরত পাঠাচ্ছি না। তাদের পরিবার ও সন্তানরা নতুন বছরের ছুটির দিনগুলো উদ্যাপনের জন্য রাশিয়ার যে স্থানগুলো সাধারণত ব্যবহার করেন তা তাদের জন্য নিষিদ্ধ করব না।’ তবে মার্কিন অবরোধের জবাব দেওয়ার অধিকার তার দেশ রাখে বলেও পুতিন জানান। সিএনএন জানায়, এর আগে অবশ্য রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনের সিদ্ধান্তের জবাবে রাশিয়ায় নিযুক্ত ৩৫ মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেন। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ৩৫ মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কারের কথা সুপারিশ করেছিল এর মধ্যে ৩১ জন মস্কোয় মার্কিন দূতাবাসে এবং বাকি চারজন সেন্ট পিটার্সবুর্গে মার্কিন কনস্যুলেটে কর্মরত। কূটনীতিক বহিষ্কারের নিন্দা জানিয়ে রুশ প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ নিজের টুইট ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘এটা হতাশাজনক, যে ওবামা প্রশাসন সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের কথা জানিয়ে মেয়াদ শুরু করেছিল তারা রাশিয়াবিরোধী যন্ত্রণা নিয়ে মেয়াদ শেষ করছে। তারা শান্তিতে থাকুক।’ যুক্তরাষ্ট্রের ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানের সময় রুশ হ্যাকিংয়ের কারণেই ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হতে পেরেছেন বলে নির্বাচনের পর থেকেই অভিযোগ করে আসছে ওবামা প্রশাসন। এমনকি মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে বলেও সম্প্রতি স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে। রুশ হস্তক্ষেপের কারণেই হিলারি ক্লিনটনকে ডিঙিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হতে পেরেছেন বলে হিলারির নির্বাচনী শিবির ও ওবামা প্রশাসন থেকে দাবি করা হচ্ছিল। অবশেষে নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ওবামা প্রশাসন বৃহস্পতিবার দেশটি থেকে ৩৫ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। শুধু তাই নয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এসব কূটনীতিক ও তাদের পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের নির্দেশ দেয় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। মেরিল্যান্ড ও নিউইয়র্কে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহের কাজে নিয়োজিত রাশিয়ার দুটি কার্যালয়ও বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় ওবামা প্রশাসন। সেই সঙ্গে নির্বাচনে হস্তক্ষেপে জড়িত অভিযোগে রাশিয়ার পাঁচটি প্রতিষ্ঠান ও চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বহিষ্কৃত রুশ কূটনীতিকরা ওয়াশিংটন ডিসিতে রুশ দূতাবাস ও দেশটির সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটে কর্মরত। ওবামা প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্ত সম্পর্কে হোয়াইট হাউস বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘রুশ সাইবার তত্পরতার উদ্দেশ্য ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করা, যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিদ্যমান আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত করা, আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সততা নিয়ে সন্দেহের বীজ বপন করা এবং মার্কিন সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর আত্মবিশ্বাস নষ্ট করা। এসব রুশ তত্পরতা অগ্রহণযোগ্য এবং সহ্য করা হবে না।’

 

সর্বশেষ খবর