জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে দেশবাসী ‘হতাশ’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সবার আশা ছিল, প্রধানমন্ত্রী দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার আভাস দেবেন। ভাষণে তা ছিল না। এ বক্তব্য সময়ের চাহিদা মেটাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। দেশবাসী এ ভাষণে সম্পূর্ণ হতাশ হয়েছে। আমরাও হতাশ হয়েছি। একতরফা দোষারোপের  মাধ্যমে তার ভাষণে প্রচ্ছন্নভাবে অগণতান্ত্রিক ও একদলীয় মানসিকতাই ফুটে উঠেছে। গণতন্ত্র ও সমঝোতার পক্ষে আমরা আমাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছি।’ গতকাল রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভাষণটি একেবারেই গতানুগতিক। আত্মতুষ্টি ও আত্মস্তুতিতে ভরা। উন্নয়নের যে ফিরিস্তি তিনি তুলে ধরেছেন, তার অনেক কিছুই ভুল, অসত্য, ভিত্তিহীন। এতে রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁক। দেশের মানুষ তাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতায় বোঝেন, দেশ উন্নয়ন, নাকি অবনতির পথে এগোচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার একটি ধারাবাহিকতা। বৈধ কিংবা অবৈধ সব সরকারকেই সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য কিছু কাজ করতে হয়। কিছু উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে হয়। জাতীয় উন্নয়নের চিত্র হিসেবে সেসবের ফিরিস্তি দিলে মানুষ হতাশ হয়। হামলা-মামলা, জেল-জুলুমে বিপর্যস্ত বিরোধী দলগুলো সব গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ডেমোক্রেটিক স্পেস প্রতিদিন সংকুচিত হচ্ছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। দুর্নীতি, লুণ্ঠন অবাধে চলছে। ব্যাংকগুলো ও শেয়ারবাজার লুট হয়ে গেছে। জনজীবনে নিরাপত্তা নেই। সুবিচার ও আইনের শাসন নেই। শিক্ষার মান নেমে গেছে। আয়ের বৈষম্য বেড়েছে। শিশুদের পাঠ্যপুস্তক ভুলে ভরা। গুম, খুন, অপহরণ, শিশুহত্যা, নারীধর্ষণ নিত্যকার ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী সবকিছু সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন।’ তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় ও শাসকদলীয় সন্ত্রাসে সারা দেশে আজ ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলের কর্মসূচিতেও তারা একের পর এক হামলা ও অন্তর্ঘাতের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী এর জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন।

 সরকারের বৈধতা ও নৈতিকতার সংকট দেশের প্রধান সমস্যা। অথচ প্রধান সেই রাজনৈতিক সংকট তিনি এড়িয়ে গেছেন।’