সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

একুশকে ঘিরে নিরাপত্তা বলয় সারা দেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সারা দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতায়। পুলিশ সদর দফতর থেকে দেশের প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারদের এ বিষয়ে বিশেষ নোট পাঠানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জেলার শহীদ মিনারগুলো রয়েছে গোয়েন্দা নজরদারিতে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পুলিশ সুপাররা নিজ নিজ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলার পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য বিভাগগুলো ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে। ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা। দেশের পুরো নিরাপত্তাব্যবস্থা মনিটর করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া গতকাল সকালে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার বলেন, ওই দিন ঘিরে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তবে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। পুরো শহীদ মিনার ঘিরে থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা-বেষ্টনী। অতীতের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তা পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় বইমেলা ঘিরে ফেলা হয়েছে। সরেজমিন বইমেলায় বহুবার গিয়েছি। লেখক, প্রকাশক সবার সঙ্গে কথা বলেছি।’ শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ নির্দেশনা জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা মৎস্য ভবন থেকে দোয়েল চত্বর হয়ে শহীদ মিনারে প্রবেশ করবেন। সাধারণ মানুষ পলাশীর মোড় থেকে প্রবেশ করতে পারবে। ডিএমপি সূত্র জানায়, শহীদ দিবসে শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রবেশপথে থাকবে ম্যানুয়াল চেকিং ও মেটাল ডিটেক্টর চেকিং। সর্বশেষ আর্চওয়ে পার হয়ে শহীদ মিনারে সাধারণ মানুষকে প্রবেশ করতে হবে। চারদিকে থাকবে পুলিশের সতর্ক অবস্থান ও পেট্রোল ব্যবস্থা। মৎস্য ভবন থেকে নিউমার্কেট এলাকা, বিশেষ করে দোয়েল চত্বর থেকে পলাশী এলাকার প্রতিটি জায়গা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে, যা কন্ট্রোল রুম থেকে মনিটর করা হবে। আজ ২০ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনার ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। নিরাপত্তায় নজরদারিতে শহীদ মিনারের চারপাশে থাকবে ওয়াচ টাওয়ার। পুরো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আট হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ওই সময় কোনো ভাসমান দোকান সেখানে থাকবে না।

ট্রাফিক নির্দেশনা : ট্রাফিক নির্দেশনা ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি বেলা ২টা পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে বলে মহানগর পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে পথনির্দেশিকা পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, গোরস্তান এবং শহীদ মিনারে যারা শ্রদ্ধার্ঘ্য ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যাবেন, রাস্তায় তারা বসতে বা দাঁড়াতে পারবেন না। সবার চলাচলের সুবিধার জন্য বর্ণিত রাস্তায় কোনো ধরনের প্যান্ডেল তৈরি করা যাবে না। এতে আরও জানানো হয়, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা থেকে টিএসসি মোড় হয়ে শহীদ মিনারে যাওয়ার পথ বন্ধ থাকবে। একইভাবে উপাচার্য ভবন গেট থেকে ফুলার রোড হয়ে ফুলার রোড মোড় পর্যন্ত রাস্তা এবং চানখাঁর পুল থেকে কার্জন হল পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ থাকবে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে জনসাধারণকে পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চানখাঁর পুল থেকে বকশীবাজার মোড় হয়ে বুয়েটের সামনে দিয়ে পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়ে শহীদ মিনারে যাওয়া যাবে। শ্রদ্ধা জানানোর পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি যাওয়া যাবে এবং মেডিকেলের সামনের রাস্তা দিয়ে চানখাঁর পুল হয়ে শুধু বের হওয়া যাবে। কিন্তু শহীদ মিনারের দিকে আসা যাবে না।

সর্বশেষ খবর