শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিশ্বকে নয়, আমার কাজ আমেরিকাকে প্রতিনিধিত্ব করা

প্রতিদিন ডেস্ক

বিশ্বকে নয়, আমার কাজ আমেরিকাকে প্রতিনিধিত্ব করা

ডোনাল্ড ট্রাম্প

‘সারা বিশ্বকে নয়, আমেরিকাকে প্রতিনিধিত্ব করাই আমার কাজ।’ মঙ্গলবার রাতে ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল হিলে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া প্রথম বক্তব্যে এ কথা বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও মহান করে তোলাই তার কাজ। এ জন্য তিনি নিজ দেশের নাগরিকদের অগ্রাধিকার দিতে চান। দেশটির ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ঐতিহাসিক বক্তব্যে ট্রাম্প মার্কিন নাগরিকদের জন্য ব্যাপক কর রেয়াতের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি ওবামা কেয়ার বাতিল করে নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা সহজলভ্য করার ঘোষণা দেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, দিনের পর দিন যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের নিরাপত্তা দিয়েছে, অন্য দেশ পুনর্গঠন করেছে। কিন্তু নিজ দেশের নাগরিকদের উন্নতির জন্য আগের সরকারগুলো উদাসীন থেকেছে। নিজেদের সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিয়ে অন্যদের সীমান্ত রক্ষা করেছে। এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না। ট্রাম্প তার বক্তব্যে মুসলিম জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তিনি বলেন মুসলিম জঙ্গিদের দমন করা হবে। অভিবাসন নীতি সংস্কার করা হবে। অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন করা হবে। আমেরিকা শান্তি চায়, অন্য দেশকে আমেরিকার এই চাওয়ার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। তিনি বলেন, ‘আশাবাদের একটি নতুন জোয়ার এসেছে, যা অসম্ভব স্বপ্নকে আমাদের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসছে। এর মধ্য দিয়ে আমেরিকার বিশালত্বের একটি নতুন অধ্যায় দেখতে পাচ্ছি।’ বক্তৃতায় ইহুদিদের সমাধিক্ষেত্রে ভাঙচুর ও কানসাস অঙ্গরাজ্যে ভারতীয়কে গুলি করে হত্যার নিন্দা জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদ ‘আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমাদের জাতি নীতিগত দিক থেকে আলাদা হতে পারে, তবে ঘৃণা ও অপশক্তির বিরুদ্ধে সব সময়ই একত্রিত থেকেছে।’ মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট আন্তপ্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশীদারি ব্যবসা চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহারের বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত ও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার বিষয়েও কথা বলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বেশ কিছু সমালোচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলা এবং সবশেষে সাংবাদিকদের নিয়ে কটূক্তি করার মতো বিষয়গুলো। অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্বাগত জানান স্পিকার পল রায়ান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেনস। কংগ্রেস সদস্য, বিচারপতি, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমন্ত্রিত অতিথিরা দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্টকে সম্ভাষণ জানান। ডোনাল্ড ট্রাম্প ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও অধিবেশনে কক্ষের উপস্থিত সবাইকে সম্বোধন করে বক্তব্য শুরু করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অন্য দেশ থেকে আমেরিকায় যখন পণ্য আসে, তখন অনেক সময় কর আরোপ করা হয় না বা নামমাত্র কর আরোপ করা হয়। অথচ আমেরিকা যখন বাইরের দেশে পণ্য রপ্তানি করে, তখন অতিরিক্ত কর আরোপ করা হয় বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে। বাণিজ্যের এ ভারসাম্যহিনতা আর চলতে দেওয়া যাবে না। মুক্ত বাণিজ্যের প্রতি আমরা যেমন শ্রদ্ধাশীল, অন্য দেশকেও একইভাবে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আট থেকে নয় বছর পর আমেরিকার স্বাধীনতার ২৫০ বছর পালিত হবে। সে দিনটিতে দাঁড়িয়ে আমরা আজকের দিনটাকে ঘুরে দাঁড়ানোর দিন হিসেবে দেখব। আমরা অনেক যুদ্ধ দেখেছি, এখন শান্তি চাই।’ ২৫০তম স্বাধীনতা দিবসে আমেরিকাকে শান্তিময় ও ন্যায়ভিত্তিক আমেরিকা হিসেবে দেখা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এক ঘণ্টার ভাষণে জাতির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা একই পতাকা, একই রক্ত ধারণ করি; তাই আমরা ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমেরিকাকে মহান করে তুলব।’ এএফপি, বিবিসি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর