মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভার বৈঠক

গ্রামে ঘর তৈরিতেও লাগবে ছাড়পত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগর-শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও বাড়িঘর নির্মাণ এবং যে কোনো উন্নয়নকাজে ভূমি ব্যবহার করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রেখে আইন করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ-সংক্রান্ত খসড়াটির অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক থেকে শততম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল জয়ী হওয়ায় আনুষ্ঠানিক অভিনন্দন জানানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভা পাঁচ বছর কারাদণ্ডের সঙ্গে ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা আইন, ২০১৭-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এ আইন পাস হলে নগরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও বাড়িঘর নির্মাণ এবং যে কোনো উন্নয়নকাজে ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র নিতে হবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ব্রিফিংয়ে বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনায় যেন শৃঙ্খলা আসে সেজন্যই এ আইন করা হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে যেন জমির ব্যবহার করা হয় সেজন্য আইনে অনেক প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তিনি জানান, প্রস্তাবিত খসড়ায় গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২৭ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া গণপূর্ত সচিবের নেতৃত্বে থাকবে ২৫ সদস্যের নির্বাহী পরিষদ। পূর্তমন্ত্রীর নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদ মূলত নীতিনির্ধারণী বিষয়ে কাজ করবে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন করাই হবে নির্বাহী পরিষদের কাজ। এ ছাড়া জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদের কাছে পরিকল্পনাগুলো সুপারিশসহ উপস্থাপন করবে নির্বাহী পরিষদ।

মন্ত্রিসভায় ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের প্রস্তাব অনুমোদন : জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালনের জন্য ২৫ মার্চকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত একটি দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞের দিনটিকে সরকার ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণার আনুষ্ঠানিক এই সিদ্ধান্ত নিল জাতীয় সংসদের স্বীকৃতির পর। আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালনের জন্য এরই মধ্যে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

শফিউল আলম জানান, মন্ত্রিসভার অনুমোদনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ায় এখন থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন করা হবে। তবে চলতি বছর থেকে শুরু হচ্ছে কিনা— সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় তা বলতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবসে সরকারিভাবে সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ খরচ করা যায়। কারা অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তার বিবরণও সেখানে লিপিবদ্ধ আছে। তিনি বলেন, দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে পালনের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রক্রিয়া শুরু করেছে। জাতিসংঘে এ-সংক্রান্ত একটি সংস্থা আছে। তাদের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান। এর আগে ৭ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লাখো মানুষের জনসভায় বাঙালির অবিসংবাদিত এই নেতা বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

 

সর্বশেষ খবর