শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রায় যে কোনো দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় উদ্ভূত পিলখানা হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতে ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত ১৫২ আসামির মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. শওকত হোসেন, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের হাই কোর্ট বেঞ্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে। হাই কোর্টে যে কোনো দিন এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এদিকে পিলখানা হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন, বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও খালাস পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে সাজা বাড়াতে রাষ্ট্রপক্ষে করা তিনটি আপিল বিলম্বের কারণে খারিজ করা হয়েছে। আসামির সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি এই বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি। ওই বছরের ১৮ জানুয়ারি শুনানি শুরু হয়। গতকাল পর্যন্ত ৩৭০ দিন শুনানি হয়েছে। এ মামলায় আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারোয়ার কাজল। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলায় কিছু আসামি আছে যাদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু হয়নি। কিছু আসামি আছে, যারা খালাস পেয়েছেন তাদের সাজা বাড়াতে এবং খালাসের বিরুদ্ধে তিনটি আপিল করেছিলাম। কিন্তু দেরিতে আবেদন করায় তিনটি আবেদনই নাকচ করেছে আদালত। তিনি বলেন, এ মামলায় এতো লোককে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তাদের সবার ফাঁসি বহাল থাকে কিনা বলা যাচ্ছে না। আবার যাদের সাজা হয়েছে তাদের সবাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কিনা সেটি আদালত বিবেচনায় নেবে। তিনি বলেন, আসামিদের অপরাধ প্রমাণের জন্য যে ধরনের সাক্ষ্য-প্রমাণ দরকার, রাষ্ট্রপক্ষ তা উপস্থাপন করতে পারেনি। ফলে আশা করছি, অধিকাংশ আসামিই খালাস পাবেন। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ প্রাণ হারান ৭৪ জন। পরবর্তীতে পরিবর্তন করে সীমান্তরক্ষী এ বাহিনীর নাম রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর পিলখানা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন অস্থায়ী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে ১৫২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৬১ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেয় আদালত। রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাই কোর্টে আসে। এ ছাড়া দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করে আসামিপক্ষ। এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষও খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে ও সাজা বাড়াতে আপিল করে।

সর্বশেষ খবর