শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বেইমানি করে বাংলাদেশকে পানি দেব না

কলকাতা প্রতিনিধি

বেইমানি করে বাংলাদেশকে পানি দেব না

বাংলাদেশকে ভালোবাসেন বলে রাজ্যের ক্ষতি করেও বাংলাদেশের সঙ্গে ছিটমহল চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন বলে জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গতকাল আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়ায় এক জনসভায় মমতা এই মন্তব্য করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘...আমরা কি ছিটমহল দিইনি? ছিটমহলে বাংলাদেশের ৭ হাজার একর জমি ছিল, আর বাংলার ১০ হাজার একর জমি ছিল। কিন্তু বাংলাদেশকে ভালোবাসি বলেই আমরা ৭ পেয়েছি কিন্তু দিয়েছি ১০। এই সমস্যা ৬৬ বছর ধরে পড়ে ছিল কেউ সমাধান করেনি, কিন্তু আমরা করে দিয়েছি।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই দুই দেশের মধ্যে থাকা ছিটমহলগুলো হস্তান্তরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ভারত বাংলাদেশকে মোট ১১১টি ছিটমহলের জন্য ১৭ হাজার ১৬০ একর জমি দেয়, অন্যদিকে বাংলাদেশ ৫১টি ছিটমহল বাবদ মোট ৭ হাজার ১১০ একর জমি হস্তান্তর করে ভারতকে। প্রতিবেশী দেশটিকে ভালোবাসার খাতিরেই পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতি সত্ত্বেও ফারাক্কা চুক্তি মেনে নেওয়া হয়েছিল বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘আজ থেকে ২৫ বছর আগে ফারাক্কা থেকে বাংলাদেশকে যখন পানি দেওয়া হলো তখন বলা হলো ৭০০ কোটি রুপি দেওয়া হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই রুপি তো দিলই না, উল্টো কয়েক শ গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেল। ফারাক্কা শুকিয়ে গেছে, বাংলা শুকিয়ে গেছে।’ তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যুকে কেন্দ্র করে যে বাদানুবাদ চলছে সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন ‘...আজকে আবার বলছে পানি দিতে হবে। পানি আমিও দিতে চাই কিন্তু আমি কি বাংলার মানুষগুলোকে মেরে দিয়ে বাংলাদেশকে পানি দেব? আমি বাংলার মানুষের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না। যতক্ষণ পর্যন্ত থাকব বাংলার মানুষের পাহারাদার হয়ে থাকব।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বাংলাদেশকে পানি দিতে চাই। আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। কিন্তু যেখানে পানি আছে সেখান থেকে দেব। যেখানে নেই সেখান থেকে দেব কী করে? আমি তো দেব না বলিনি। কিন্তু আমরা ঠিক করে দেব কোথা থেকে দেব।’ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও বাংলাদেশকে উদ্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘আমার গজলডোবার ওপরে অনেকের নজর আছে দেখছি। চার বছর ধরে গজলডোবা করেছি। ৩ হাজার কোটি রুপির প্রজেক্ট। আরে গজলডোবাই যদি তোমাদের দিয়ে দিই, সব কাজ যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে শিলিগুড়ি, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি পানি পাবে না। খেতে পাবে না। আমাকে তো সেদিকেও নজর রাখতে হবে।’

সর্বশেষ খবর