শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইউনূসের জন্য হুমকি দিতেন হিলারির কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইউনূসের জন্য হুমকি দিতেন হিলারির কর্মকর্তারা

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্ত আটকানোর চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আর্থিক হিসাব নিয়ে তদন্ত শুরুর হুমকি দিয়েছিল বলে খবর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংবাদপত্র। উল্লেখ্য, তখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন হিলারি ক্লিনটন। জয়কে উদ্ধৃত করে ওয়াশিংটনভিত্তিক দি ডেইলি কলার এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা একাধিকবার তাকে চাপ দেন, যাতে তিনি ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করার বিষয়ে তার মাকে রাজি করান। খবর বিডিনিউজের।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা জয়কে উদ্ধৃত করে ডেইলি কলারের প্রতিবেদনে বলা হয, তিনি বৈধভাবে ১৭ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু ওই সময় পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ এনে তদন্ত শুরুর হুমকি দেন। “তারা আমাকে বারবার বলেছে, ‘দেখ, ইউনূসের প্রভাবশালী বন্ধুবান্ধব আছে, আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লিনটনের বিষয়টা তো সবাই জানে’।” ডেইলি কলার লিখেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি দুই দফা হিলারির সঙ্গে বৈঠক করেন। ডেইলি কলার নিউজ ফাউন্ডেশনকে তিনি তখন বলেছিলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিলের সঙ্গে ইউনূসের যোগাযোগ আছে বলেই অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়।  বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপু মনি ডেইলি কলারকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকার বা তাদের পররাষ্ট্র দফতরের কোনো চাপ সে সময় ছিল কি না আমি বলতে পারব না। আমি শুধু বলতে চাই, এখানে দুটো বিষয় স্পষ্ট। প্রথমত স্টেট ডিপার্টমেন্টের যোগাযোগ এবং দ্বিতীয়ত বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন প্রত্যাহার।’ ইউনূসের বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ‘অবশ্যই অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ সরকারকে, বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে হেনস্তা করতে চেয়েছিলেন। তিনি জানতেন, আমাদের দেশের জন্য, সরকারের জন্য পদ্মা সেতু কতটা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই তিনি সেটা কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন।’ জয় ডেইলি কলারকে বলেছেন, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসসহ স্টেট ডিপার্টমেন্টের নানা পর্যায় থেকে সে সময় তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। পত্রিকাটি লিখেছে ভার্জিনিয়ায় বসবাস করায় জয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তাদের প্রায়ই দেখা সাক্ষাৎ হতো। সাধারণত তাদের মধ্যে বাণিজ্য বা নিরাপত্তার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও ২০১০ এর পর তা দ্রুত বদলে যেতে থাকে। ‘তখন তারা কেবল একটা প্রসঙ্গই টেনে আনত, আর তা হলো ইউনূস। মুহাম্মদ ইউনূসকে বাঁচাতে হবে— এটা তাদের অবসেশনে পরিণত হয়েছিল,’ বলেন জয়। ডেইলি কলার বলছে, এ বিষয়ে তারা গ্রামীণ আমেরিকা ও ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের বক্তব্য জানার চেষ্টা করলেও সাড়া পায়নি।

 

সর্বশেষ খবর