শনিবার, ২২ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচন নিয়ে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র হতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের সময় নানামুখী ষড়যন্ত্র হতে পারে। আওয়ামী লীগ দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে কোনো কিছু করে না। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসলেই বিএনপি-জামায়াত নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্তে লিপ্ত হয়। তারা দেশি-বিদেশি লবি নিয়োগ দিয়েছে। কাজেই নির্বাচনের সময় দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্ত হতে পারে। আসন্ন সিটি নির্বাচনগুলোতে যোগ্য প্রার্থী খোঁজা এবং দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। গতকাল বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিকৃত ছবি ব্যবহার করে একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র তৈরির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিক সালমানের বিরুদ্ধে বরিশালে মামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি কেউই সঠিকভাবে আঁকতে পারেন না। আর যে শিশুটি ছবি এঁকেছে সে তো ছোট মানুষ। এ ছবি ব্যবহার করে আমন্ত্রণপত্র করা দোষের কী আছে? তিনি বলেন, বিভিন্ন দল থেকে কিছু লোক আমাদের দলে ভিড়ে দল ও সরকারকে বিব্রত করছে। হুট করেই ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা করল। ইউএনওকে গ্রেফতারের ঘটনায় আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। একজন আওয়ামী লীগের নেতা কীভাবে ওই ঘটনায় মামলা দায়ের করেন তা বোধগম্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা তীব্র ক্ষোভ জানান। তারা মানহানি মামলায় ইউএনওকে গ্রেফতারের নির্দেশেরও তীব্র সমালোচনা করেন। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা মামলার বাদী ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে দল থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী সাজুকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না সে বিষয়ে চিঠি দেওয়া হবে। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাজুর বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, ওবায়দুল কাদের, ড. আবদুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্রগুলো জানায়, আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলীয় কোন্দল নিয়েও ক্ষোভ জানান শেখ হাসিনা। ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলার ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন। বরিশাল সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় এক-দুজন শীর্ষ নেতার নাম উল্লেখ করে বলেন, আমরা এত উন্নয়ন করলাম, তারপরও ব্যক্তি কোন্দলে দলীয় প্রার্থীকে হারিয়ে দেওয়া হলো। এবার আমরা কোন্দল দেখতে চাই না। সিটি নির্বাচনে গ্রহণযোগ্য ও যোগ্য প্রার্থী খোঁজা হচ্ছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা কোনো নেতিবাচক বার্তা তৃণমূলে দিতে চাই না। উন্নয়ন করেছি, সেগুলো মানুষের মধ্যে প্রচার করে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে। এ জন্য দলের নেতা-কর্মীদের মাঠে কাজ করতে হবে। বৈঠকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফারুক চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়। এ ছাড়া রংপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৫টি ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ।

সর্বশেষ খবর