শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বনানীতে ব্যবসায়ী হত্যার মূল হোতারাও শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বনানীতে ব্যবসায়ী হত্যার মূল হোতারাও শনাক্ত

সিদ্দিক মুন্সী

রাজধানীর বনানীতে খুনের ঘটনায় মূল হোতা দুজন শনাক্ত হলেও পুলিশের প্রাথমিক টার্গেট চারজনে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বনানীর নিজ কার্যালয়ে জনশক্তি রপ্তানিকারক সিদ্দিক হোসেন মুন্সি ওরফে এস মুন্সিকে খুনের পরিকল্পনায় ছিল মোট ছয়জন। সিসিটিভি ফুটেজে যে চারজনকে দেখা গেছে তারা ভাড়াটে খুনি। এই চাঞ্চল্যকর খুনের মামলার ছায়া তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহজাহান সাজু জানান, আমরা খুনি ধরতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। শিগগির তারা ধরা পড়বে।

পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ফুটেজে চারজনকে শনাক্ত করা গেছে। অন্য দুজন ছিল বাইরে। ধারণা করা হচ্ছে তারাই মূল হোঁতা।  জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে আবদুল সালাম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে লেনদেনের বিরোধ এবং চাঁদাবাজি বলে  সন্দেহ করা হয়। তবে খুনি শনাক্তের পর মামলার তদন্তে নতুন মোড় নিয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানো নিয়ে এক রিক্রুটিং এজেন্টের সঙ্গে ব্যবসায়িক বিরোধ ছিল মুন্সির। এসব বিষয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও আর্থিক লেনদেনের অন্য কোনো বিরোধ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা। এস মুন্সির সঙ্গে ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট এমন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বনানী থানা পুলিশ। এর মধ্যে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকেও রাখা হয়। গোয়েন্দাদের একটি সূত্র জানায়, খুনে সন্দেহভাজন মূল হোঁতাকে তারা এখনই আটক করছেন না। সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া ভাড়াটে খুনিদের প্রাথমিকভাবে গ্রেফতার করার চিন্তা রয়েছে তাদের। ভাড়াটেদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গ্রেফতার হবেন মূল হোঁতা। খুনিরা তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখলেও অফিসের ভিতরই খুন করার পরিকল্পনা করে। হত্যার ধরন, অস্ত্রের ব্যবহার এবং পূর্বাপর তথ্য বিশ্লেষণে পুলিশ নিশ্চিত যে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়ারা পেশাদার সন্ত্রাসী।  সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সালাম নামের এক দালাল ছয় লাখ টাকার দাবিতে এস মুন্সির বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়— সালামের এমন অবস্থা নেই, যে সে মোটা অঙ্কের টাকায় খুনি ভাড়া করবে। আবার চাঁদার দাবিতে জীবন শঙ্কাও ছিল না এস মুন্সির। তাই বড় ধরনের কোনো ব্যবসায়িক বিরোধ সন্দেহ নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। খুনিদের ছবিসহ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যালোচনা করেন তদন্তকারীরা। এতেই তথ্য বেরিয়ে আসে মোট ছয়জন ছিল খুনের মিশনে। এস মুন্সির সঙ্গে এক জনশক্তি ব্যবসায়ীর বিরোধ চলছিল। তিনিও এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানো নিয়ে এই বিরোধের সূত্রপাত। তার অফিসও এস মুন্সির মেসার্স এস মুন্সি ওভারসিজের কাছে। খুনিরা হত্যাকাণ্ডের আগে একাধিকবার রেকি করেছে। ঘটনাস্থলের পাশের অফিসের লোকজন খুনিদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করে। খুনিরা পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেয়, অফিসের মধ্যেই খুন করা ভালো। এ কারণে বাইরে সুযোগ থাকলেও ঝুঁকি নেয়নি তারা। খুনিরা গুলি করে যাওয়ার সময় ডন ভাইকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিল। এ ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য করা হয় বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর