বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

গণতন্ত্র মানে শুধু ব্যালট বাক্সে ভোট নয় : বার্নিকাট

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণতন্ত্র মানে শুধু ব্যালট বাক্সে ভোট নয় : বার্নিকাট

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট বলেছেন, গণতন্ত্র বলতে বিস্তৃত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সব উপাদানকে বোঝায়।

গণতন্ত্র শুধু ব্যালট বাক্সে ভোট দেওয়া নয়। নির্বাচনের আগে যা হয়, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচন পরবর্তী সবকিছুই গণতন্ত্রের অংশ। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত ‘নির্বাচনে নারী নেতৃত্ব বৃদ্ধি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় একথা বলেন তিনি।

মার্শা বার্নিকাট বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলি, বাংলাদেশের গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। যখন নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ থাকবে, স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ হবে, ভোটারদের কাছেও এর ফলাফল অনেক বেশি আস্থাশীল হবে। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য অর্জন ও কিছু নারী নেত্রী থাকলেও এখনো রাজনৈতিক দল ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নারীরা পিছিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্শা বার্নিকাট।

গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদসহ আরও অনেকে অংশ নেন।

প্রধান দুই দলের প্রতিনিধিদের একসঙ্গে পেয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতিনিধিরা যে আজ এখানে উপস্থিত তা দারুণ একটি ব্যাপার।

আমরা একটি গণতান্ত্রিক সমাজ থেকে এটাই আশা করি। শুধু রাজনৈতিক দলের নেতারা নন, আমরা আশা করি, সব স্তরের নাগরিকরা একসঙ্গে এসে সমস্যা সমাধান করবে—যা বাংলাদেশিদের প্রভাবিত করে। তিনি জানান, গণতন্ত্র শুধু ব্যালট বাক্সে ভোট দেওয়া নয়, এর মধ্যে রয়েছে প্রাক-নির্বাচন, নির্বাচন ও নির্বাচনোত্তর সময়। একটি দৃঢ় গণতন্ত্রে নাগরিকদের স্বাধীনভাবে ও শান্তিপূর্ণভাবে তাদের প্রার্থীদের প্রচারণা চালাতে পারা উচিত; কোনো ধরনের ভয়, ডর বা চাকরি হারানোর শঙ্কা ছাড়া ভোটের নিবন্ধন করতে পারা ও বৈধ নির্বাচনের ফলাফলকে শ্রদ্ধা করতে পারা উচিত। বার্নিকাট জানান, একটি গণতান্ত্রিক সমাজে সহিংসতার স্থান নেই। এর মধ্যে রয়েছে লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা ও সব ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা, যেমন শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ অথবা রাজনৈতিক মতামত প্রকাশে বাধা।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও স্মরণ করে বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে দৃঢ় করতে সমাজে নারীদের মুক্ত, নিরাপদ অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, তাদের অবদান অর্থনীতিতে, স্থানীয় ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বে রয়েছেন তারা। কিন্তু এখনো অনেক কিছু করার রয়েছে। উল্লেখযোগ্য অর্জন এবং বেশ কিছু বিশিষ্ট নারী নেত্রী থাকা সত্ত্বেও নারীরা এখনো রাজনৈতিক দলের ও নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে রয়েছে বলেন তিনি।

নির্বাচনী ব্যবস্থায় নারীদের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ বিভিন্ন কারণে নিরুৎসাহিত করা হয়ে থাকে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোয় নারী প্রতিনিধিত্ব না রাখা, প্রতিবন্ধকতামূলক সামাজিক ও ধর্মীয় প্রত্যাশা, লিঙ্গভিত্তিক ও রাজনৈতিক সহিংসতার কারণেই নারীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছে বলে মনে করেন বার্নিকাট।

সর্বশেষ খবর