সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইয়াবার টাকার জন্য ছিনতাইয়ে প্রাণ যায় সেই শিশুটির

ছিনতাইকারীর স্বীকারোক্তি

আদালত প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া রেলস্টেশন থেকে দয়াগঞ্জ যাওয়ার পথে নামাপাড়া এলাকায় ছিনতাইকালে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে শিশু নিহতের ঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করেছে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। শনিবার রাতে রাজীব নামের ওই ছিনতাইকারীকে দয়াগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। রিকশায় করে এক মহিলা ভোর সোয়া ৬টার দিকে যাত্রাবাড়ীর দিকে যাওয়ার পথে তার ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে থাবা দিয়েছিল রাজীব। তখন ওই মহিলা (আকলিমা) তার কোলের বাচ্চাসহ রিকশা থেকে পড়ে যান। আর এতে করে মারা যায় বাচ্চাটি।

এদিকে গ্রেফতারের পর রাজীবকে গতকাল আদালতে তোলা হয়। রাজীব এ সময় বিচারকের খাসকামরায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী ওরফে সৈকত আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালত সূত্র জানা গেছে, আসামি রাজীব স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছে,  ‘আমি পড়ালেখা করিনি। ছোট বেলায় বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকায় আসি। ঢাকার মুন্সিরটেকে ইলেকট্রিক বোর্ড বানানোর কাজ করি। ইয়াবার নেশা করি। গত ১৮/১২/১৭ তারিখ ভোরবেলা নেশা করার টাকা জোগাড় করার জন্য ছিনতাই করার উদ্দেশে দয়াগঞ্জে একটি টিভি-ফ্রিজের দোকানের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। ভোর আনুমানিক সোয়া ৬টার দিকে রিকশায় করে এক মহিলা যাত্রাবাড়ীর দিকে যাচ্ছিলেন। মহিলার হাতে একটি ভ্যানিটি ব্যাগ ছিল। আমি সেই ব্যাগটি থাবা দিয়ে কেড়ে নিই। তখন ওই মহিলা ও তার কোলের বাচ্চা রিকশা থেকে পড়ে যায়। আমি দৌড়ে চিকা মারা স্কুলের দিকে যাই। সেখান থেকে ২২ নম্বর মেসে গিয়ে দোতলার ছাদে উঠে ব্যাগ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা বের করে নেই। ব্যাগের ভিতরে বাচ্চাদের নিমা, লোশন, তেল, কাজল ইত্যাদি ছিল। পরে ব্যাগটি ছাদ থেকে ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে দেই। আমি সেখান থেকে দয়াগঞ্জের বাঁশপট্টি হয়ে ঘুণ্টিঘরের দিকে যাই ইয়াবা কেনার জন্য। ইয়াবা কিনে ঘুণ্টিঘর বস্তিতে গিয়ে ইয়াবা খাই। কিছুক্ষণ পর লোকজনের কাছে শুনি যে, দয়াগঞ্জে একটি বাচ্চা রিকশা থেকে পড়ে মারা গেছে। আমি তখন বুঝতে পারি, যে মহিলার ব্যাগ ছিনতাই করেছি, সেই মহিলার বাচ্চাটি রিকশা থেকে পড়ে মারা গেছে।’

সর্বশেষ খবর