সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ বর্ষসেরা দেশের তালিকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

খ্যাতনামা ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্টের সর্বসেরা দেশের শীর্ষ চারের তালিকায় ছিল বাংলাদেশ। ক্রমাগত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্যের হার কমে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী বিশেষভাবে পরিচিতি পাওয়া বাংলাদেশ মনোনয়নের প্রস্তাবনায় উঠে এসেছিল নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জায়গা দেওয়ায়। যদিও শেষ পর্যন্ত পত্রিকাটি সেরা দেশ হিসেবে ফ্রান্সকে মনোনয়ন দিয়েছে। ইকোনমিস্টের এ তালিকায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের সঙ্গে শীর্ষ চারে ছিল আর্জেন্টিনা ও দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশকে না দেওয়ার কারণ হিসেবে ইকোনমিস্ট বলেছে, বাংলাদেশ যদি নাগরিকদের স্বাধীনতা খর্ব না করত এবং প্রকাশ্যে ইসলামি উগ্রপন্থিদের আতঙ্ক ছড়ানোর সুযোগ না দিত, তাহলে হয়তো তারাই সেরা নির্বাচিত হতো। লন্ডনভিত্তিক পত্রিকাটির চলতি সংখ্যার ‘সমীহ জাগানো দেশ’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে এবার বাংলাদেশকে বিরল এই সম্মানে ভূষিত করার লোভ সামলাতে পারছে না তারা। কারণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের আরও বহু অর্জন রয়েছে। দেশটিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুততর হচ্ছে এবং দারিদ্র্যের হার ব্যাপকভাবে কমছে। তবে দেশটি নাগরিক স্বাধীনতা খর্ব এবং ইসলামপন্থিদের মুক্ত রাজত্ব মেনে না নিলে তারাই হয়তো এবার জয়ী হতো। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বড়দিনে ইকোনমিস্ট একটি দেশকে বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বেছে নেয়। তবে তাদের তালিকায় কোনো দুর্বৃত্ত দেশ— যেমন উত্তর কোরিয়া স্থান পায় না। এ সম্মানে ভূষিত হওয়ার জন্য চীন ও আমেরিকার মতো বিশাল ভূখণ্ড কিংবা অর্থনৈতিক শক্তি থাকারও প্রয়োজন নেই। বরং যে দেশটিতে গত ১২ মাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধিত হয়েছে অথবা বিশ্বকে উজ্জ্বলতর করেছে, তাকে বেছে নেওয়া হয়। পত্রিকাটি বলছে, ‘২০১৫ সালে মিয়ানমারকে বেছে নিয়েছিলাম আমরা। তবে সেটি ভুল ছিল। সে সময় স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে গণতন্ত্রের দিকে পথচলার জন্য মিয়ানমারকে বেছে নেওয়া হয়। আমরা স্বীকার করছি যে রোহিঙ্গাদের প্রতি তাদের আচরণ লজ্জাজনক ছিল। কিন্তু সেটি শিগগিরই এত ভয়াবহ হবে তা বুঝতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’ এ কারণেই এবার তার প্রতিবেশী বাংলাদেশকে তারা বর্ষসেরা দেশের তালিকার শীর্ষে রেখেছে, যারা গত চার মাসে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। তবে পত্রিকাটি এবার বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বেছে নিয়েছে ফ্রান্সকে। বলা হয়েছে, তরুণ সাবেক ব্যাংকার ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ কোনো বড় দলের সমর্থন ছাড়াই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তার নবগঠিত দল সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ম্যাক্রোঁ বিদেশি মানুষ, পণ্য ও ধারণার জন্য তার দেশকে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। দেশে তিনি সামাজিক পরিবর্তন এনেছেন। ক্ষমতা গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যেই তিনি বহু স্পর্শকাতর সংস্কার করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আইন ও ফ্রান্সের কঠোর শ্রম আইন শিথিল করা। এ ছাড়া প্রতিবেদনে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট মৌরিসিও ম্যাক্রির আর্থিক সংস্কার, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করার প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাইয়ের বিচার এবং স্যামসাং প্রধানকে কারাদণ্ড দেওয়া। তিনি এসব করছেন উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হুমকির মধ্যেই।

সর্বশেষ খবর