শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্ত্রীসহ ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা

আদালত প্রতিবেদক

অপহরণের ঘটনা সাজিয়ে ‘মামলা করার’ অভিযোগে স্ত্রীসহ লেখক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছে পুলিশ। মামলাটি বিচারের জন্য গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এবং ঢাকার আদালতের পুলিশপ্রধান আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, নিয়মানুযায়ী রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম সুব্রত ঘোষ শুভর আদালতে মামলাটি উপস্থাপন করা হবে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, পূর্বপরিকল্পিত        ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লেখক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার স্ত্রীকে দিয়ে অপহরণ এবং চাঁদা দাবির মামলা করিয়েছেন। পুলিশ ও আদালতকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অযথা হয়রানি এবং বিভ্রান্ত করায় পেনাল কোড আইনের ২১১/১০৯ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদ্বয়ের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় ১৯ ডিসেম্বর ননএফআইআর প্রসিকিউশন নম্বর-২২৫/১৭ দায়ের করা হয়। এর আগে ৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম এ মামলা করার অনুমতি দেন পুলিশকে। গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মাহবুবুল হক ১৪ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পাশাপাশি মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে মজহার দম্পতির বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করার অনুমতি চান। ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোশতাক আহম্মেদ জনান, ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় মিথ্যা মামলা দায়েরের শাস্তির বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করলে অথবা কোনো অপরাধ করেছে বলে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে মামলা দায়েরকারীকে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। তবে অভিযোগের বিষয় যদি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন বা সাত বছরের বেশি সাজার যোগ্য হয়, আর সেই অভিযোগ যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয়, তাহলে মিথ্যা অভিযোগকারীর সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড হবে। আর ১০৯ ধারায় অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্রে অংশ নেওয়া, উসকানি দেওয়া বা সহযোগিতার বিষয়ে বলা হয়েছে। এ ধরনের ক্ষেত্রে আসামি যে অপরাধ করার ষড়যন্ত্র করেছেন বলে প্রমাণিত হবে, তার ক্ষেত্রে সেই অপরাধের শাস্তিই প্রযোজ্য হবে। মামলাসূত্রে জানা গেছে, গত ৩ জুলাই সকালে রাজধানীর শ্যামলীর বাসা থেকে বেরিয়ে লেখক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহারের নিখোঁজ হওয়ার খবর আসে। ওইদিনই ফরিদা আখতার তার স্বামীকে অপহরণের অভিযোগ এনে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন, যা পরে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এর ১৮ ঘণ্টা পর গভীর রাতে নাটকীয়ভাবে যশোরে একটি বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করে র‌্যাব-পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত শুরুর পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ১০ জুলাই ঢাকার আদালতে অর্চনা রানী নামে এক নারীকে হাজির করে। নিজেকে ফরহাদ মজহারের শিষ্য বলে জবানবন্দিতে দাবি করেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, সেদিন ফরহাদ মজহার তার জন্য অর্থ জোগাড় করতেই বেরিয়েছিলেন এবং ১৫ হাজার টাকাও পাঠিয়েছিলেন। খুলনায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্টের দোকানে ফরহাদ মজহারের যাওয়ার এবং ওই এলাকায় তার একাকী ঘোরাফেরার একটি ভিডিও পরে সাংবাদিকদের সরবরাহ করে পুলিশ।

সর্বশেষ খবর