শনিবার, ২৩ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

সাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগ

-------- নূরে আলম সিদ্দিকী

ঝর্ণা মনি

সাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগ

‘কালের স্রোতধারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতার চেতনায় সমগ্র জাতিকে উজ্জীবিত করে একের পর এক আন্দোলনের সোপান তৈরি করে নিরস্ত্র বাঙালিকে অস্ত্র ধারণে বাধ্য করে মুক্তির স্বাদ এনে দেয় যে দলটি, তার নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।’ আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নূরে আলম সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে বলতে গিয়ে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, স্বৈরাচার এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার শক্তি হিসেবে জন্ম হয়েছিল আওয়ামী লীগের। যে চেতনার ভিত্তিতে দ্বি-জাতিতত্ত্বের ম্যান্ডেট নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের প্রান্তিক জনতা নির্বাচনের মাধ্যমে নিরঙ্কুশ রায় দিয়ে মুসলিম লীগের স্বপক্ষে পূর্ব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ম্যান্ডেট প্রদান করেন, সেই মানুষগুলোই ১৯৪৭ থেকে ’৪৯ পর্যন্ত মাত্র দুই বছরের মাথায় এসে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা করেন আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং রাজনীতিতে প্রাচীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অবদানের যথাযথ মূল্যায়নের প্রশ্নে নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের সমন্বিত আন্দোলন এক সময় জনতার প্রাণশক্তিতে পরিণত হয়। ক্রমান্বয়ে আন্দোলন এমন স্তরে পৌঁছায় যে, সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ ভিসুভিয়াসের মতো জ্বলে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে অস্ত্র ধরতে বাধ্য হয়। এটি অবশ্যই আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের যৌথ আন্দোলনের ফলশ্রুতি। যুদ্ধে সমগ্র বিশ্ব এবং বিশ্ব মানবতা বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আওয়ামী লীগ তার অতীত ঐতিহ্য ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পেরেছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, অতীতের আওয়ামী লীগ ছিল গণতান্ত্রিক।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর হাতে গড়া এবং শেখ মুজিবুর রহমানের সযত্ন লালিত্যে বেড়ে ওঠা আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী ছিল না। পরবর্তীতে কুটিল ও কৌশলী বামদের অনুপ্রবেশে আস্তে আস্তে মৌলিক অধিকার বিবর্জিত যে পথচলা শুরু করে, আজ ২০১৮ সালে এসে কানায় কানায় পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। তিনি বলেন, আজ বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকলেও দেশ মৌলিক অধিকার বিবর্জিত। বিগত নির্বাচন হয়েছে ভোটারবিহীন। ১৫৩টি আসনে নির্বাচন হয়নি। আগামী নির্বাচন নিয়েও মানুষ সংশয় বিমুক্ত নয়। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আপনার প্রত্যাশা কী— জবাবে নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, দলের একজন নির্মোহ সমর্থক হিসেবে আজকের দিনে এটাই কাম্য যে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে জাতি পাক। গণতন্ত্রের প্রদীপ্ত সূর্যকিরণ প্রান্তিক জনতার মৌলিক ও নাগরিক জীবনকে উদ্ভাসিত করুক। জীবন সায়াহ্নে এসে দলের কাছে এটাই আমার প্রত্যাশা।

সর্বশেষ খবর