শনিবার, ৭ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক সংকট যে কোনো সময়ের চেয়ে গভীর : আলী রীয়াজ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

অতীতে বাংলাদেশ যত ধরনের রাজনৈতিক সংকট বা অনিশ্চয়তা মোকাবিলা করেছে এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি তার চেয়ে ভিন্ন এবং গভীর। এখন দেশের রাজনীতিতে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তা আসলে হাইব্রিড রেজিম বা দোআঁশলা ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থায় দৃশ্যত গণতন্ত্রের কিছু কিছু উপাদান থাকলেও সেগুলো প্রধানত শক্তি প্রয়োগের ওপরে নির্ভর করে। ফলে রাষ্ট্রের নিপীড়ক যন্ত্রগুলো আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে এবং তাদের এক ধরনের দায়মুক্তি দেওয়া হয়। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে ‘বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি’ শীর্ষক গণবক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। রিডিং ক্লাব ট্রাস্ট ও জ্ঞানতাপস আবদুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ বক্তৃতার আয়োজন করে। আলী রিয়াজ বলেন, এক সময় যে প্রাণবন্ত সিভিল সোসাইটি ছিল এখন আর তার চিহ্ন পর্যন্ত অবশিষ্ট নেই। গত এক দশকে সিভিল সোসাইটির বিরুদ্ধে অব্যাহত প্রচারণা চালানো হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে নির্বাচনকে জবাবদিহির একমাত্র ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। তিনি আরও বলেন, যেহেতু নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেহেতু আর সব ধরনের জবাবদিহির ব্যবস্থা চূর্ণ করে ফেলাই হচ্ছে ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার উপায়। বাংলাদেশের সমাজে অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি, সহিংসতার ব্যাপক বিস্তারের যে সব ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করছি তা আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা এখানেই। রাজনীতিতে ইসলামপন্থিদের প্রভাব বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত।  তুলনামূলকভাবে রক্ষণশীল এবং সংস্কারপন্থি। গত কয়েক বছরে তুলনামূলকভাবে সংস্কারপন্থি ধারা দুর্বল হয়েছে। তাদের অনুপস্থিতির সুযোগে রক্ষণশীল ইসলামপন্থিরা রাজনীতির প্রান্তিক অবস্থান থেকে রাজনীতির কেন্দ্রে আসতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে রক্ষণশীল ইসলামপন্থিরা রাজনীতির এজেন্ডা নির্ধারণের মতো ক্ষমতা রাখেন।  ক্ষমতাসীন দল গত দুই-তিন বছরে এই শক্তিকেই প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। এ সময় তিনি বলেন, যদি আগামী নির্বাচনে বিএনপি এবং অন্যান্য পরিচিত দল অংশগ্রহণ না করে এদের প্রভাবের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান।

সর্বশেষ খবর