শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

জালিয়াতি করতেই ইভিএম : বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জাতীয় নির্বাচনে ডিজিটাল জালিয়াতি করতেই সরকার ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণের তোড়জোড় শুরু করেছে। সরকার আরেকটি ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং করতেই জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভোট কারচুপি করে নিজেদের পক্ষে ফলাফল নিতে নতুন ফন্দি হলো এই ইভিএম। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিপন্থী এই ইভিএম বাংলাদেশের ভোটাররা কখনই মেনে নেবে না। গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এসব কথা বলেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, কবির মুরাদ, বিএনপি নেতা আবদুল আওয়াল খান, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রিজভী আহমেদ বলেন, সরকারি দলের লোকেরা ভালো করেই জানে যে জনগণের সমর্থন তাদের সঙ্গে নেই। আর সেই জন্য জনগণের ভোটাধিকার হরণের জন্য চুপিসারে এই ডিজিটাল অন্তর্ঘাত পদ্ধতি ব্যবহার করার ফন্দি এঁটেছে তারা। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো ও নাগরিক সমাজের সংলাপ চলাকালে ও পরবর্তী সময়ে গণমাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজেও বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে না। কিন্তু হঠাৎ করে পুরনো ভূত জেগে উঠল কেন? আসলে এই ইভিএম ব্যবহারের জন্য নির্বাচন কমিশনের মহা আয়োজনের কলকাঠি নাড়ছে বর্তমান সরকার। অথচ পৃথিবীর বড় বড় সব দেশেই এখন এই ইভিএম পদ্ধতি প্রত্যাখ্যাত। কারণ এটা নিরঙ্কুশভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে এর মাধ্যমে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ ও ফলাফল গণনা সম্ভব নয়। বরং ফলাফল জালিয়াতির ক্ষেত্রেই এটা ব্যবহূত হচ্ছে। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ইসি সচিব বলেছেন, জাতীয় সরকার নির্বাচনে ব্যাপকভাবে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত রয়েছে কমিশনের। গত সোমবার তিনি বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে আড়াই হাজার ইভিএম মেশিন কেনা হয়েছে। আরও ২৬০০ কোটি টাকার ইভিএম মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত সরকার ইসির মাধ্যমে নিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এই বিতর্কিত মেশিন নিয়ে সরকারের কেন এত তোড়জোড় সে বিষয়ে জনমনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।  সরকার কেন এই অগ্রহণযোগ্য বিতর্কিত মেশিন কিনতে উন্মুখ সেটা আর কারও বুঝতে বাকি নেই। আমরা জাতীয় নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের দাবি থেকে সরে আসতে নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানাচ্ছি। সদ্য অনুষ্ঠিত গাজীপুরের সিটি নির্বাচনেও এই ইভিএমের এক্সপেরিমেন্ট চালিয়েছে ইসি। সেখানে ছয়টি কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টিতেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে জয়ী করা হয়েছে। অথচ এই ছয়টি কেন্দ্রে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সব কয়টিতেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী পরাজয়বরণ করতেন। সুতরাং গাজীপুর সিটি নির্বাচনের এক্সপেরিমেন্টে উত্তীর্ণ হয়ে এখন জাতীয় নির্বাচনের ১০০টি আসনের ফলাফলে ইভিএমের মাধ্যমে জয়লাভের নীল-নকশা বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার।

 কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আর কোনো রকমের কারচুপি কিংবা ভোট ডাকাতি আর বরদাশ্্ত করবে না।

সর্বশেষ খবর