ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, গণপরিবহনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের আন্দোলন দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। সবাই উদ্বিগ্ন, রাস্তায় বের হলে ফিরতে পারব তো? রাস্তায় বেরোলে সারাক্ষণ মনে ভাবনা জাগে, এই বুঝি দুর্ঘটনা ঘটল। মন্ত্রীরা শুধু নন, অনেকেই পরিস্থিতি না বুঝে এমন কিছু বলে বসেন, যা কোনো সমাধান দিতে পারে না। বরং সংকট আরও ঘনীভূত করে। তাদের এসব অতিকথনে মানুষের মনে প্রচণ্ড আঘাত লাগে। রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু, গণপরিবহনে নৈরাজ্য, সড়ক দুর্ঘটনা, চলমান ছাত্র আন্দোলন, মন্ত্রীদের অতিকথন বিষয়ে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন এই শিক্ষাবিদ। ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অনেকেই বোঝেন না কোন পরিস্থিতিতে কী কথা কীভাবে বলতে হবে। এতে সহজে সমাধানযোগ্য বিষয়টি আরও জটিল হয়ে যায়। এসব অহেতুক কথা বলা বন্ধ করতে হবে। নিজেকে ব্যথাতুরের জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখতে হবে। ছাত্রদের চলমান আন্দোলনকে যুক্তিসংগত হিসেবেই দেখছেন ঢাবির সাবেক এই উপাচার্য। শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা ও বয়স দুটিই তাদের আন্দোলনে নামিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তাদের দুই সহপাঠী নির্মমভাবে মারা গেছে। এতে তাদের মনোজগতে বিরাট ধাক্কা লেগেছে। এ ছাড়া বয়সেও তারা ছোট। সবকিছুই তাদের তাত্ক্ষণিকভাবে রাস্তায় নামাতে বাধ্য করেছে। যদিও এটি সংগঠিত কোনো প্রতিবাদ নয়, তবু দাবি আদায়ে তারা রাজপথকেই বেছে নিয়েছে। চলমান আন্দোলন নিরসনে সরকারের পদক্ষেপগুলোকে ইতিবাচক বলে মনে করেন তিনি। বলেন, নির্মম এই ঘটনার পরই গণপরিবহনের নৈরাজ্য খতিয়ে দেখাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। দুই শিক্ষার্থীর নির্মম মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। এখন নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অভিভাবকদের উচিত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। আর সরকারের উচিত শিক্ষার্থীদের যুক্তিপূর্ণ দাবিগুলো মেনে নেওয়া। কারণ লাইসেন্সবিহীন গাড়ি, অদক্ষ চালক, ট্রাফিক আইন মেনে না চলার কারণেই সড়কে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এখনই তা থামানো না গেলে রক্তের স্রোত বন্ধ করা যাবে না।