মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুবাইতে অর্থ পাচার, ফালুসহ ৯ ব্যবসায়ীকে দুদকে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক

অফশোর কোম্পানি খুলে ৮০ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬৫ কোটি টাকা) দুবাইয়ে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি ব্যবসায়ী মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ ৯ ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে গতকাল সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত আলাদা চিঠির মাধ্যমে তাদের ৫ সেপ্টেম্বর দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। বিমান, স্থল, নৌবন্দর কর্তৃপক্ষসহ ইমিগ্রেশন পুলিশকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দুদকের অভিযোগ, তারা বিদেশে অফশোর কোম্পানি খুলে মানি লন্ডারিং ও হুন্ডির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছেন। জানা গেছে, দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি দল এ অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে। দলের আরেক সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এটা দুদকের নিয়মিত কাজের অংশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এ জন্যই ডাকা হয়েছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু ছাড়াও যাদের তলব করা হয়েছে তারা হলেন— আরএকে পেইন্টসের পরিচালক শায়লিন জামান আকবর ও কামার উজ্জামান, রোজা প্রোপার্টিজের পরিচালক আশফাক উদ্দিন আহমেদ, আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের পরিচালক মো. আমির হোসাইন এবং এম এ মালেক, আরএকে পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক মো. মাকসুদুল ইসলাম, আরএকে সিরামিকসের স্বতন্ত্র পরিচালক ফাহিমুল হক এবং স্টার সিরামিকসের পরিচালক প্রতিমা সরকার। জানা গেছে, এর আগে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে ১৪ আগস্ট তলব করা হলে তিনি তার প্রতিষ্ঠানের কোম্পানি সচিবের মাধ্যমে সময়ের আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে সময় দিয়েছে দুদক। এরও আগে ২ আগস্ট মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ নয়জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশনে চিঠি পাঠায় দুদক। চিঠিতে বলা হয়, ওই নয়জনের বিরুদ্ধে ৮০ লাখ মার্কিন ডলার সমমূল্যের প্রায় ৬৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮২ টাকা হিসাবে) দুবাইয়ে পাচার করে অফশোর কোম্পানি খুলে বিনিয়োগ, দুবাইয়ে আরও শতকোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে এসব ব্যক্তি দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তারা যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন, সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইমিগ্রেশন পুলিশকে অনুরোধ করা হয় দুদকের পক্ষ থেকে। যাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় তারা হলেন— বিএনপির নেতা ও সাবেক এমপি মোসাদ্দেক আলী ফালু, আরএকে পেইন্টস ও আশালয় হাউজিংয়ের পরিচালক এস এ কে একরামুজ্জামান, তার ছেলে এবং আরএকে পেইন্টস ও আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের পরিচালক কামার উজ্জামান, ঝুলপার বাংলাদেশ লিমিটেড ও রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান, আরএকে পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক মাকসুদুল করিম, আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের দুই পরিচালক মোহাম্মদ আমির হোসেন এবং এম এ মালেক, রোজা প্রোপার্টিজের পরিচালক আশফাক উদ্দিন আহমেদ এবং আরএকে পেইন্টস ও আরএকে ক্যাপিটাল লিমিটেডের পরিচালক শায়লিন জামান আকবর।

সর্বশেষ খবর