বুধবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শহিদুল আলমের জামিন শুনানিতে হাই কোর্ট বিব্রত

নিজস্ব প্রতিবেদক

শহিদুল আলমের জামিন শুনানিতে হাই কোর্ট বিব্রত

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের জামিন আবেদনের শুনানিতে বিব্রতবোধ করেছে হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস এবং বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ শুনানিতে বিব্রতবোধ করে। আদালতে জামিন আবেদনের  পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এখন নিয়ম অনুযায়ী আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। তিনি জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য নতুন একটি বেঞ্চে পাঠাবেন। এদিকে শহিদুলের জামিন আবেদন শুনানিতে হাই কোর্ট বিব্রতবোধ করায় হতবাক হয়েছেন তার আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এ মামলা নিয়ে হতবাক হলাম। এই মামলা নিয়ে বেশ কিছুদিন কথা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল সময়ও চেয়েছেন। বিব্রত হলে প্রথম দিনই মামলাটির শুনানি নিয়ে বিব্রত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ পর্যায়ে বিব্রত হওয়াতে আমরা হতবাক হয়েছি। ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, শহিদুল আলমের জামিন আবেদনের শুনানি করতে গেলে এক পর্যায়ে আদালত আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে বলে জানিয়েছে। আমরা তখন বলেছি— বাস্তবতা কি এটাই যে, একজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো যাবে? সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা তার মুখ থেকে বলা হয়েছে— এটা বলানো হবে? তারপর তাকে আটকে রাখা হবে? তারপর তাকে জামিন চাইতেই দেওয়া হবে না? এটাই কি আমাদের বাস্তবতা? সারা হোসেন বলেন, আমরা আদালতের কাছে বলেছি, আমাদের আবেদনটির শুনানি করা হোক। সিদ্ধান্ত কী হবে সেটা আদালতের ব্যাপার। আমরা শুনানির সুযোগটি চাই। এটা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। তিনি বলেন, আমরা আদালতের বিব্রত হওয়ার কারণ জানতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আদালত কারণ বলেনি। এভাবে বিব্রত বোধ করা সত্যিই অস্বাভাবিক।  তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ বিষয়ে বলেছেন, শহিদুল আলম আন্তর্জাতিকভাবে অনেকের সঙ্গেই যুক্ত আছেন। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে যদি স্পর্শকাতর, মিথ্যা ও উসকানিমূলক বিষয়ে লাইভ পোস্ট করা হয়, তবে সেটাকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। শহিদুল আলমের জামিন শুনানিতে হাই কোর্টের বিব্রত হওয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি এ মামলায় শুনানি করতে চেয়েছিলাম। এ জন্য প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত শুনল না। তাই আমার বক্তব্যও উপস্থাপন করা হয়নি। শহিদুল আলমকে বিনা কারণে আটকে রাখা হয়েছে তার আইনজীবীদের এমন দাবিকে অ্যাটর্নি জেনারেল নাকচ করে দেন। আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় ৬ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ১৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করা হলে ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন। এরপর ১৯ আগস্ট শুনানির তারিখ এগোনোর জন্য আবেদন করা হলে তা গ্রহণ করেনি আদালত। ২৬ আগস্ট শহিদুল আলমের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চাইলে ওই আদালত শুনানির জন্য তা গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় ২৮ আগস্ট হাই কোর্টে তার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ৬ আগস্ট শহিদুল আলমকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এর আগের দিন রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে তাকে তুলে নেয় ডিবি। সাত দিনের রিমান্ড শেষে ১২ আগস্ট শহিদুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় নিম্ন আদালত।

সর্বশেষ খবর