বৃহস্পতিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রবৃদ্ধির পুরো টাকা ধনীদের ঘরে

—খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ

প্রবৃদ্ধির পুরো টাকা ধনীদের ঘরে

বিশ্বে অতি ধনী মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে দ্রুত হারে বাংলাদেশে বৃদ্ধির বিষয়টি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নীতির বিরুদ্ধে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। তার মতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেটা হয়েছে, এর পুরো টাকাটাই ধনীদের ঘরে চলে গেছে।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বঙ্গবন্ধু বলতেন সমাজ হবে বৈষম্যহীন। মানুষে মানুষে বৈষম্য থাকবে না। বৈষম্য থাকলেও কম থাকবে। কিন্তু এখন তো বাংলাদেশে বৈষম্য ভীষণ বেড়ে গেছে। আসলে বড়লোকেরা আরও বেশি বড়লোক হচ্ছে। গরিবরা আরও বেশি গরিব হচ্ছে। এটা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূলনীতির বিরুদ্ধে সংঘাতপূর্ণ অবস্থানে চলে যায়। দেশবরেণ্য এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) যে ৭ শতাংশ হয় এটা সত্য। কিন্তু প্রবৃদ্ধির সেই টাকাটা বড়লোকদের ঘরে যায়। গরিবের ঘরে যায় না। যখন গরিবের অবস্থান পরিবর্তন হয় না, তখন দেশে বৈষম্য বাড়তে থাকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাষ্ট্রের চার মূলনীতির কথা বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক নীতির ক্ষেত্রে সমাজতন্ত্রের কথা বলতেন। যার অর্থ হলো সামাজিক সুবিচার। বর্তমানে যাকে ন্যায়ানুগ অর্থনীতি বলা হয়। সেটির অর্থ, সমৃদ্ধি হবে। প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ কেন, ১০ শতাংশও হতে পারে। কিন্তু সেই প্রবৃদ্ধি সমহারে সমভাবে বণ্টন হবে।

অতি ধনী মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে দ্রুত হারে বাংলাদেশে বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, যে ৭ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, তার সুষম বণ্টন হয়নি। প্রবৃদ্ধি সরাসরি ধনীর ঘরে চলে গেছে। সে কারণে দরিদ্র থেকে মধ্যবিত্ত হয়নি। মধ্যবিত্ত থেকে ধনী হয়নি। ধনী থেকে অতি ধনী হয়েছে। অতি ধনী আরও ধনী হয়েছে। কিন্তু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেটা হয়েছে, এর পুরো টাকাটাই ধনীদের ঘরে চলে গেছে।

সাবেক এই ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনীতি যদি আমরা বিশ্বাস করি, তাহলে অতি দরিদ্র উন্নতি করে দরিদ্র হবে। দরিদ্র থেকে উন্নতি করে নিম্নমধ্যবিত্ত হবে। নিম্নমধ্যবিত্ত উন্নতি করে মধ্যবিত্ত হবে। আবার মধ্যবিত্ত উন্নতি করে উচ্চ মধ্যবিত্ত হবে। উচ্চ মধ্যবিত্ত উন্নতি করে ধনী হবে। তারা ধনী থেকে অতি ধনী হবে।’

সর্বশেষ খবর