রবিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার ম্যাচ আজ

মরু রাজ্যে ক্রিকেট খেলতে নেমে সাইমুম ঝড়ে পথ হারিয়ে দিশেহারা মাশরাফি, সাকিবরা। পথ হারিয়ে পথিক স্ব্বপ্ন দেখেন সঠিক পথে ফেরার, তেমনি আফগানিস্তান ও ভারতের কাছে বিধ্বস্ত মাশরাফি, সাকিবরাও স্বপ্নচ্যুত হননি। স্বপ্ন দেখছেন এবং সেটা ভরা নিঃশ্বাসে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আজ জীবন বাজির ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে ফাইনাল খেলতে রশিদ খানের আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই মাশরাফিদের। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় টানা দুই ম্যাচে গো হারা হারের ধাক্কা সামলে সেটা কি সম্ভব? বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব সম্ভব বলেই বিশ্বাস করেন। সেজন্য স্বপ্ন দেখছেন এবং স্বপ্ন দেখতে বলেছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের।লিগ পর্বে আফগানিস্তান ম্যাচটি ছিল গুরুত্বহীন। ম্যাচটির ফল কোনো প্রভাব ফেলেনি সুপার ফোরে। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পূর্ণ শক্তির দল খেলতে পারে, সেজন্য আফগান ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল দুই সেরা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মুস্তাফিজুর রহমানকে। ভারতের বিপক্ষে পূর্ণ শক্তি নিয়েও রবীন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণি এবং ভুবনেশ্বর ও বুমরাহর গতিতে নাকাল হয়ে ১৭৩ রানে গুটিয়ে যায় মাশরাফি বাহিনী। ওই ম্যাচে টাইগারদের মানসন্মান বাঁচান মাশরাফি ও মিরাজ অষ্টম উইকেট জুটিতে ৬৫ রান যোগ করে। মাশরাফি ২৬, মিরাজ ৪২ রান করেন। ব্যর্থ হন দুই ওপেনার এবং মাহমুদুল্লাহ ২৭, সাকিব ২৭ ও মুশফিক ২১ রান করেন। ভারত অনায়াসে ম্যাচটি জিতে নেয় ৭ উইকেটে। বাড়ি ফিরে গেছে শ্রীলঙ্কা। দ্বীপরাষ্ট্রের বিপক্ষে যা একটু ভালো ব্যাটিং করেছে টাইগাররা। ওই ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলেছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। মুশফিকের ব্যাট থেকে বেরোয় ১৪৪ রানের নান্দনিক ইনিংস এবং মিথুন করেন ৬৩ রান। এরপর ব্যাটসম্যানদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি অন্য ম্যাচগুলোতে। আফগানিস্তান ম্যাচে রশিদের গুগলী, নবী ও মুজিবের স্পিনে ৪২.১ ওভারে ১১৯ রানে গুটিয়ে যায়। টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন সাকিব, ২৭ মাহমুদুল্লাহ ও ২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন মোসাদ্দেক সৈকত। পুরোপুরি ব্যর্থ দুই ওপেনার লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুই ওপেনার শুধু আফগান ম্যাচে নয়, ব্যর্থ ছিলেন ভারতের বিপক্ষেও। দুজনের মিলিত রান ছিল ১৪। ওপেনারদের ব্যর্থতায় আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন অধিনায়ক মাশরাফি ও টিম ম্যানেজমেন্ট। ফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হঠাৎ করে রাতের আঁধারে ঢাকা থেকে উড়িয়ে আনেন দুই অফ ফর্মের ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েশ ও সৌম্য সরকার। দুই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান লাল-সবুজ পতাকার জার্সি গায়ে চড়িয়ে রঙিন পোশাকে সর্বশেষ খেলেছিলেন গত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে। দুজনকে উড়িয়ে আনায় দল কতটা লাভবান হবে, সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। গতকাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে দুই ক্রিকেটারের অন্তভুক্তিতে বিস্মিত না হলেও অস্বাভাবিক বললেন দলের সহ অধিনায়ক সাকিব, ‘বিষয়টি অস্বাভাবিক। এমন সাধারণত হয় না। তবে দলের প্রয়োজনে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। তাদের যখন নেওয়া হয়েছে, তখন দেখাই যাক। কারোর না কারোর উপর ভরসা রাখতেই হয়। ইনশাল্লাহ তারা সেটা ডেলিভারি দিতে পারবে।’ ওপেনার পরিবর্তন করে ফের জয়ের ধারায় ফিরতে মরিয়া টাইগাররা। খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পক্ষে কি আদৌ সেটা সম্ভব? বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন সম্ভব, ‘এর আগেও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি আমরা। হাল ছেড়ে না দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছি এবং সাফল্যও পেয়েছি। আমি বিশ্বাস করি আমরা ঘুরে দাঁড়াবো।’ আফগানিস্তানের হোম গ্রাউন্ড আবুধাবী শেখ জায়েদ স্টেডিয়াম। সেখানকার ধীরলয়ের উইকেটের ‘এ’ টু ‘জেড’-সবকিছুই নখদর্পণে তাদের। পরিচিত উইকেটে ফের কঠিন লড়াইয়ে পড়তে হবে বাংলাদেশকে। প্রচণ্ড গরমে ক্লান্তি জুড়িয়ে মাশরাফি, সাকিবরা কতটা সফল হবেন, সেটা এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।

সর্বশেষ খবর