শুক্রবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ দৃশ্যমান করছে না ইসি

গোলাম রাব্বানী

সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ দৃশ্যমান করছে না ইসি

মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন

আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ নির্বাচন কমিশন দৃশ্যমান করছে না বলে মনে করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন। সেইসঙ্গে সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ ভোট করতে নির্বাচন কমিশনারদের ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে কী কী কাজ করতে হবে এর সব বহুদিন থেকে হয়ে আসছে এবং এগুলো নির্ধারিত কাজ। নির্বাচনী কাজ নিয়ে মানুষের বা মিডিয়ার যে খটকা হচ্ছে, তা হলো— উনারা (নির্বাচন কমিশন) উনাদের কাজ দৃশ্যমান করছেন না। প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কাছে তারা দৃশ্যমান করছেন না যে, কী কী কাজ ইসি করল, কতটুকু করল। যদি তারা দৃশ্যমান করতেন, তাহলে আমার বিশ্বাস সবাই আশ্বস্ত (সেটিসফাইড) থাকতেন।’ ইসির প্রতি মানুষের আস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যে তাদের কাজ বলিষ্ঠভাবে করছে, তারা যে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে এবং তারা যে কমিটেড একটা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য, তা মানুষকে বোঝাতে হবে। ইসির পক্ষ থেকে এ ধরনের কথা আসে বলে আমার মনে হয় না। যাতে মানুষ কনভিন্স হচ্ছে না।’

সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বোঝাতে হবে যে, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। নির্বিঘ্নে মানুষ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে। ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবে। সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মানুষকে আশ্বস্ত করতে হবে। আর বোঝানোর জন্য মিডিয়ার সহায়তা নিতে হবে। মানুষ যদি বুঝতে পারে ভোট দিতে কোনো ভয় নেই, তাহলে মানুষ আসবে।’ একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করতে হলে নির্বাচন কমিশনকে কী করতে হবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি যে দুর্বলতাটা দেখতে পাচ্ছি, তা হলো তাদের নিজদের মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করতে হবে। তাদের প্রতিটি কাজ মানুষের কাছে পৌঁছাতে মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। আর জনতাকে আশ্বস্ত করতে পারলে নির্বাচন অবাধ হবে, সুষ্ঠু হবে।’ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে আমার মনে হয় না কোনো জটিলতা হবে। আমি ভেবেছিলাম ইভিএম বিতর্ক শেষ হয়েছে। কিন্তু আবার ইভিএম কিনতে গিয়ে মানুষ ভাবছে— কী ব্যাপার! এতসংখ্যক ইভিএম কেন কিনছে কমিশন? এ বিষয়ে ইসির একটা জবাব দেওয়া উচিত ছিল।’ ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষকে কনভিন্স না করে ইভিএম ব্যবহার করা উচিত হবে না। যদিও আমি ইভিএমের পক্ষে। আমাদের সময় আমরা ইভিএম শুরু করেছিলাম যে, ইভিএম দিয়ে ভোট হবে। মানুষকে কনভিন্স করতে হবে, ইভিএম দিয়ে ভোট হলে ভোট সহজ হবে, সুন্দর হবে, সুষ্ঠু হবে, কারচুপির কোনো সুযোগ থাকবে না এবং গণনা সহজে হয়ে যাবে। এ কথাগুলো মানুষকে বোঝাতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘কীভাবে ইভিএম ব্যবহার করা যায় তাও মানুষকে দেখাতে হবে। মানুষের মন থেকে ভয় দূর করতে হবে। এই ইভিএমগুলো কিন্তু ইন্টারনেটের সঙ্গে কানেকটেট নয় যে হ্যাক হয়ে যাবে। আমার মনে হয় যদি নির্বাচন কমিশন ইভিএম করে তবে সীমিত আকারে করতে হবে। যেখানে উনারা (ইসি) প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন। মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে কনভিন্স করতে পারবেন যে, ইভিএমে ভোট হলে তারা (নাগরিকরা) আপত্তি করবেন না।’

সর্বশেষ খবর