সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বড় বদল আসছে রপ্তানি নীতিতে

সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে ডেনিমের পোশাক, ওষুধ উপকরণ ও সিনথেটিকের জুতা রপ্তানি পণ্যে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে ভোজ্যতেল

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনে নতুন রপ্তানি নীতির খসড়া (২০১৮-২১) তৈরি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এখন এটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। রপ্তানি বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে খসড়ায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত হিসেবে নতুন তিনটি খাত অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এ ছাড়া আরও ৫ ধরনের পণ্যকে বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাতে নতুন যে পণ্যগুলো ঢুকছে তার মধ্যে রয়েছে— ডেনিম, ওষুধ উপকরণ (একটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল

ইনগ্রেডিয়েন্টস এবং  বিকারক) ও জুতা (চামড়া, অচামড়াজাত ও সিনথেটিক)। আর বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত পণ্যগুলো হচ্ছে— মোটরসাইকেল ও ব্যাটারি, ফটোভোলটিক মডিউল, কাজুবাদাম, প্রক্রিয়াজাত কাঁকড়া এবং খেলনা। জানা গেছে, বর্তমান রপ্তানি নীতিতে অগ্রাধিকার পণ্য হিসেবে অধিক মূল্যে সংযোজিত তৈরি পোশাক ও গার্মেন্ট এক্সেসরিজের নাম উল্লেখ ছিল। এবার সেখানে নতুন করে ডেনিম পণ্য সংযোজন করা হচ্ছে। একইভাবে অগ্রাধিকার তালিকায় শুধু ওষুধ ও চামড়াজাত জুতা অন্তর্ভুক্ত ছিল। নতুন নীতিতে ওষুধের উপকরণ এবং অচামড়াজাত জুতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতের ডেনিম পণ্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। হাইভ্যালুড এই পণ্যটি রপ্তানি খাতের সম্ভাবনাময় পণ্য হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। ডেনিম পন্য রপ্তানি করে বেশি আয় করা সম্ভব। এ কারণেই এটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া রপ্তানি বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে ওষুধের পাশাপাশি ওষুধ উপকরণ এবং চামড়াজাত জুতার পাশাপাশি অচামড়াজাত জুতাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, তিন বছর পর পর রপ্তানি নীতি পরিবর্তন করে সরকার। বর্তমান রপ্তানি নীতিটি তৈরি করা হয়েছিল ২০১৫ সালে, যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ বছর। পরবর্তী তিন বছরের জন্য রপ্তানি নীতির খসড়াটি তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে এটি অনুমোদনের জন্য অর্থনীতি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় (ইকনোমিক অ্যাফেয়ার্স) উপস্থাপন করা হয়েছিল। তবে প্রস্তাবিত রপ্তানি নীতির সঙ্গে বাণিজ্যনীতি ও শিল্পনীতির সংশ্লেষ থাকায় এটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে ইকনোমিক অ্যাফেয়ার্স। খসড়া রপ্তানি নীতিতে শর্ত সাপেক্ষে বেশ কিছু পণ্য রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সয়াবিন তেল ও পামঅয়েল, বাংলাদেশে চাহিদা নেই এমন মোটা দানার মুগডাল এবং গবেষণার উদ্দেশ্যে রক্তের প্লাজমা। বর্তমানে সয়াবিন ও পামতেল রপ্তানি নিষিদ্ধ পণ্য হিসেবে  অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল ও ভুটানে কিছু কিছু ভোজ্যতেল রপ্তানির অনুমতি পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অনুরোধে তাই নিষিদ্ধ পণ্য তালিকা থেকে স্থানান্তর হচ্ছে ভোজ্যতেল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বিশ্ব বাণিজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসায়ীদের সুপারিশ আমলে নিয়ে পরবর্তী তিন বছরের জন্য কিছু সংযোজন ও বিয়োজন এনে নতুন রপ্তানি নীতির খসড়া তৈরি হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

সর্বশেষ খবর