সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সংলাপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি ড. কামালের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুষ্ঠু নির্বাচনে সাত দফা দাবি জানিয়ে সংলাপ করতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে থাকা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিটি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে চিঠি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুই নেতা আ ও ম শফিক উল্যাহ ও জগলুল হায়দার আফ্রিক আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে গিয়ে জোটের প্যাডে লেখা ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিটি পৌছে দেন। চিঠি দুটি গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। প্রধানমন্ত্রীকে ‘মহোদয়’ সম্বোধন করে চিঠির শুরুতেই বলা হয়, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা। যেসব মহান আদর্শ মূল্যবোধ আমাদের জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে উজ্জীবিত ও আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করেছিল তার অন্যতম হচ্ছে ‘গণতন্ত্র’। আর গণতন্ত্রের প্রথম শর্তই হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ জনগণের পক্ষে জনগণের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। জনগণকে শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন ও শাসনকার্য পরিচালনা করবে—এটাই আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।’ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ড. কামাল বলেন, ‘আপনি নিশ্চয়ই একমত হবেন যে, বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনকে একটি মহোৎসব মনে করে। এক ব্যক্তি এক ভোটের বিধান জনগণের জন্য বঙ্গবন্ধু নিশ্চিত করেছেন, যা রক্ষা করা আমাদের সবারই সাংবিধানিক দায়িত্ব।’ চিঠিতে বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থাকে একটি ‘সংকট’ উল্লেখ করে তা থেকে উত্তরণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য ঘোষণার কথা বলেন ড. কামাল। এতে বলা হয়, ‘ইতিবাচক রাজনীতি একটা জাতিকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারসমূহ আদায়ের মূল শক্তিতে পরিণত করে তা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন। নেতিবাচক রুগ্ন রাজনীতি কীভাবে আমাদের জাতিকে বিভক্ত ও মহাসংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে তাও আমাদের অজানা নয়। এ সংকট থেকে উত্তরণ ঘটানো আমাদের জাতীয় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ  মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। একটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সবার অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে একটি অর্থবহ সংলাপের তাগিদ অনুভব করছে।’ চিঠি পাওয়ার পর এর সত্যতা নিশ্চিত করে ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবর ঐক্যফ্রন্টের পাঠানো দুটি চিঠি আমরা পেয়েছি। আগামীকাল চিঠিগুলো খোলা হবে। এরপর এ বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে জবাব  দেওয়া হবে কিনা তা ঠিক করা হবে।’

সর্বশেষ খবর