বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সংলাপের রাজনীতি রাজনীতির সংলাপ

ড. কামালের বাসভবনে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি, কালকের সংলাপে যোগ দেবে ঐক্যফ্রন্ট গণভবনে যাবেন কামাল ফখরুল রব মান্নাসহ ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল

মাহমুদ আজহার ও রফিকুল ইসলাম রনি

সংলাপের রাজনীতি রাজনীতির সংলাপ

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ গতকাল সকালে সংলাপের চিঠি নিয়ে ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় যান। তাত্ক্ষণিকভাবে চিঠির বিষয়বস্তু পড়ে দেখেন ড. কামাল—বাংলাদেশ প্রতিদিন

আওয়ামী লীগ ও ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের প্রস্তুতি শেষ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে সংলাপ হবে। আওয়ামী লীগের পক্ষে সংলাপে নেতৃত্ব দেবেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে নেতৃত্বে থাকবেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

গতকাল সংলাপের জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে দাওয়াতপত্র নিয়ে রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের বাসায় যান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। সেখানে ড. কামাল হোসেনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া চিঠি হস্তান্তর করা হয়। এরপর রাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলের নামের তালিকা ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন ড. কামাল : আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিতে তালিকা তৈরি করতে গতকাল বৈঠকে বসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির নেতারা। বিকালে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে এ বৈঠক শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টায় শেষ হয়। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিতি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সহসভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, মমিনুল ইসলাম, ডা. জাহেদুর রহমান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, জগলুল হায়দার আফ্রিক, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ও মোস্তফা আমিন। এ ছাড়াও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও বৈঠকে অংশ নেন।

জানা যায়, বৈঠকে ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সংলাপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের নেতৃত্ব দেবেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। এ ছাড়া বিএনপির প্রতিনিধির তালিকায় রয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও মির্জা আব্বাস। গণফোরাম থেকে মোস্তফা মহসীন মন্টু, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ, সুব্রত চৌধুরী ও মোস্তফা আমিন। জেএসডি থেকে আ স ম আবদুর রব, তানিয়া রব ও আবদুল মালেক রতন। নাগরিক ঐক্য থেকে মাহমুদুর রহমান মান্না ও এস এম আকরাম। এ ছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে অংশ নেবেন।

বৈঠকের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলরে (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ স্বাগতভাবে গ্রহণ করেছি। আমরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে যাব। ড. কামাল হোসেন আমাদের নেতা উনি ১৫ জনের বাইরে। জাতি আশা করে এই সংলাপের মাধ্যমে আগামী দিনে একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। কোনো সংলাপ ব্যর্থ হয়নি। এই সংলাপে সাত দফাসহ সবকিছু নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি জানান, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একজন মুখপাত্র নিয়োগ করা হয়েছে। তার নাম আ স ম আবদুর রব। এর বাইরে ফ্রন্টের কেউ কোনো কথা বললে তা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বক্তব্য হবে না।’ জানা যায়, স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের পর জাতীয় ঐক্যের শীর্ষ নেতারা আবারও বৈঠকে বসেন। সেখানে কার কী বক্তব্য হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে সংলাপে সাত দফা দাবি ড. কামালই তুলে ধরবেন। এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া আসে, তার ভিত্তিতেই বিএনপি মহাসচিবসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেবেন।

প্রধানমন্ত্রীর চিঠি : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বানে সংলাপে সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ড. কামালকে লিখেছেন, ‘সালাম ও শুভেচ্ছা নেবেন। আপনার ২৮ অক্টোবর, ২০১৮-এর পত্রের জন্য ধন্যবাদ। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংবিধানসম্মত সব বিষয় আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। তাই আলোচনার জন্য সময় চেয়েছেন, তারই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১ নভেম্বও, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭টায় আপনাদের আমি গণভবনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতা জানান, অন্যের কোর্টে বল দিতে চান না তারা। আলোচনায় রাজি নন বা সংকট সমাধানে সরকার আন্তরিক নয় এমন দুর্নামের বোঝাও বহন করতে চায় না দলটি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর উদার দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই সংলাপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে যেভাবে সংকট উত্তরণে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, এবারও তাই করছেন। সংবিধানসম্মতভাবেই ক্ষমতার বাইরে থাকা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলতে চান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে আলোচনার জন্য গণভবনে আমন্ত্রণ জানালেও প্রধানমন্ত্রীর সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফলে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এবার অবশ্য অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার জন্য সংলাপে না ডাকলেও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সংলাপে বসার আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন শেখ হাসিনা। অবশ্য সংলাপ নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিএনপির সিনিয়র নেতারা মনে করেন, এ সংলাপ ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, এরই মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে এক মামলায় পাঁচ বছর থেকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এখানে সরকারের হাত রয়েছে। তা ছাড়া যেভাবে সারা দেশে ধড়পাকড়সহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা-মামলার খড়্গ ঝুলছে তাতে আশাবাদী হওয়ার কিছু নেই। গতকাল দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংলাপ ফলপ্রসূ হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে সাত দফার ওপরই জোর দেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সরকার কিছুটা ছাড়ের মনোভাব নিয়ে এগিয়ে এলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকেও ছাড় দেওয়া হবে। তবে তফসিলের আগে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবিতে অটল থাকবে বিএনপি জোট। সরকার সদিচ্ছার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে এলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দু-একটি দাবি থেকে সরে আসার পরিকল্পনাও রয়েছে।

যা ঘটল বেইলি রোডে : আগে থেকেই সংবাদকর্মীদের কাছে তথ্য ছিল গতকাল সকাল ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর চিঠি ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় নিয়ে যাবেন তাঁর বিশেষ সহকারী ও দলের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। এজন্য ভোর থেকেই টেলিভিশন, পত্রিকা ও অনলাইনের সংবাদকর্মী ভিড় জমান ড. কামাল হোসেনের বাসার সামনে। ভিড় লক্ষ্য করা যায় উত্সুক সাধারণ মানুষেরও। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে বেইলি রোডের প্রধান সড়কে নিজের গাড়ি থেকে নামেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ। সোজা হেঁটে রওনা হন ড. কামাল হোসেনের বাসার দিকে। বাসার সামনে তাকে স্বাগত জানান গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু। এ সময় সংবাদকর্মীরা তাদের দুজনের বক্তব্য চান। এ সময় ড. আবদুস সোবহান গোলাপ সংবাকর্মীদের বলেন, ‘আগে চিঠিটা হস্তান্তর করে আসি।’

এরপর ড. কামালের বাসায় ঢোকেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী। তখন ঘড়ির কাঁটায় ৭টা ৫৫ মিনিট। ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করার পর মোস্তফা মহসীন মন্টু তাকে বসতে বলেন। এর ১ মিনিট পর পাশের রুম থেকে বেরিয়ে আসেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। ড. আবদুস সোবহান গোলাপ সালাম দিয়ে বলেন, ‘স্যার আমি ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী এবং আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক। আপনার চিঠির জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দাওয়াতপত্র দিয়েছেন। সেটা দিতেই আপনার কাছে এসেছি।’ এ সময় দুজন করমর্দন করেন।

সংবাদকর্মীরা ছবি নিতে হুড়োহুড়ি শুরু করলে ড. কামাল হোসেন টেলিভিশনের ক্যামেরা দেখে বলেন, ‘এত ক্যামেরা কেন নিয়ে এসেছেন?’ জবাবে গোলাপ বললেন, ‘না স্যার, ওরা গতকাল রাত থেকেই খবর পেয়েছে। আমরা খবর দিইনি। আমাকেও ফোন দিয়েছেন অনেকেই।’ চিঠি হাতে নিয়ে খুলে ড. কামাল হোসেন বললেন, ‘আমি সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলাম, প্রধানমন্ত্রী উত্তর দিয়েছেন। আমি খুশি। সংলাপের দ্বার উন্মুক্ত হলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি পত্রিকার মাধ্যমে জানলাম আপনারা (আওয়ামী লীগ) আমাকে চিঠি দেবেন।’ এরপর আবার দুজন করমর্দন করে ছবি তোলেন। এ সময় ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ করে আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ‘স্যার, আমি যাই?’ এ সময় ড. কামাল হোসেন চায়ের আমন্ত্রণ করে বলেন, ‘চা খেয়ে যাও?’ জবাবে ‘না স্যার, এখন আর চা খাবও না’ এ কথা বলে বেরিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও মোস্তফা মহসীন মন্টু। পরে সংবাদকর্মীরা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন। এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, সংলাপের জন্য আগামী ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় ঐক্যফ্রন্টকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সাড়ার মাধ্যমে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু হলো। গণতান্ত্রিক আলোচনা প্রক্রিয়া ধরে আমি বার বার উদ্যোগ নিয়েছি। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি বাস্তব অবস্থায় পৌঁছাব। আমি আশা করি, এ আলোচনার উদ্যোগ ইতিবাচক হয়েছে এবং হবে। লোকমুখে গুঞ্জন আছে আপনি প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. কামাল বলেন, এ খবর ভিত্তিহীন। এ সময় হাত জোড় করে তিনি ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের সই করা একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়। তা আমি গ্রহণ করি। সেই চিঠির জন্য প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ দিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে একটি অফিশিয়াল বক্তব্য আমার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের কাছে পাঠিয়েছেন। আমি তা ড. কামাল হোসেনের কাছে হস্তান্তর করলাম। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, আমরা ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সাড়া দেওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার জন্য একটি গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। ওইদিন বৈঠকে আমাদের সাত দফা ও ১১টি লক্ষ্য ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।

তালিকা নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা : রাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১৬ সদস্যের তালিকা নিয়ে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে যান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। তারা হলেন গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক, আ ও ম শফিকুল্লাহ ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মমিনুল ইসলাম। পরে প্রতিনিধি দলের নামের তালিকার অনুলিপি সাংবাদিকদের কাছেও হস্তান্তর করা হয়। তালিকাসংবলিত চিঠি গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান।

এর আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল ও বিএনপি মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২০১৩ সালে নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেই সংলাপও আলোর মুখ দেখেনি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক উত্তপ্ত অবস্থায় ওই বৈঠকের ব্যবস্থা করেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নানদেজ তারানকো। দীর্ঘদিন পর সরকারপ্রধান সংলাপে বসছেন।

সর্বশেষ খবর