দীর্ঘ তিন বছর ধরে তদন্তের পর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) চূড়ান্ত করেছে পুলিশ। এতে আসামি করা হচ্ছে সেনাবাহিনীর বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ আটজনকে। এরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। এই জঙ্গিগোষ্ঠীর সামরিক কমান্ডারের দায়িত্বে থাকা জিয়ার পরিকল্পনা ও নির্দেশেই এ হত্যাকাণ্ডটি হয় বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে। হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার মইনুল হাসান শামীমের জবানিতেও উঠে আসে এই জিয়ার নাম। অভিযোগপত্রটি অনুমোদনের জন্য গত সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম গতকাল দুপুরে মিন্টো রোডে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দিয়ে বলেন, ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর ঘটে যাওয়া এ হত্যাকাণ্ডে আনসার আল ইসলামের নয় জঙ্গি জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে ছয়জন গ্রেফতার আছেন। এরা হলেন সুনামগঞ্জের মইনুল হাসান শামীম (২৪), কুমিল্লার মো. আবদুস সবুর (২৩), চট্টগ্রামের খায়রুল ইসলাম (২৪), শেখ মো. আবদুল্লাহ (২৭), লালমনিরহাটের মো. আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪) ও ময়মনসিংহের মো. মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (২৫)। এরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলা চলার সময় টিএসসিতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তমনা লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়কে। এরপর কয়েক মাসের ব্যবধানে আরও কয়েকজন ব্লগার-লেখককে হত?্যা করা হয়। নৃশংস ওই খুনের ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৩১ অক্টোবর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ফয়সল আরেফিন দীপনকে। ওইদিনই লালমাটিয়ায় আরেক প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে ঢুকে এর কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুলসহ তিনজনকে একই কায়দায় কোপানো হয়। ওই দুই প্রকাশনা থেকেই বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশিত হয়। দীপন হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় তার স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছিলেন। অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করায় এবং কোনো সূত্র না থাকায় (ক্লুলেস) তদন্তে লম্বা সময় লেগেছে বলে এক প্রশ্নে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।