শুক্রবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফরম বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়নি বিএনপির ভোট নিয়ে দুই মত

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মনোনয়নপত্র বিতরণের এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিএনপি। গতকাল তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যেও এ নিয়ে কোনো  আগ্রহ দেখা যায়নি। আজ রাজশাহীতে জনসভা সফল করতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সবাই এখন ব্যস্ত। এদিকে গতকাল পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ চলার এক ফাঁকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাকে বিএনপিপ্রধান বলেন, ‘২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন। তবে সাত দফা দাবিতে আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচন প্রস্তুতিও নিন।’ এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সংলাপের পর পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। আমাদের চেয়ারপারসনকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার-হয়রানি বেড়েছে। বার বার পেছানোর অনুরোধ সত্ত্বেও তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপি জোট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনে যাবে কি না তা নিয়েও সংশয়ে আছে।’

দুই মত : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য। তফসিল ঘোষণার পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠকে এমন মত উঠে আসে। তবে আরও কয়েকদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার মতও এসেছে। গতকাল রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে নেতারা তাদের মত তুলে ধরেন। কেউ কেউ সিদ্ধান্তের ভার দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ওপর ছেড়ে দেন। বৈঠকে মির্জা ফখরুল ছাড়াও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান এবং নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে। গতকাল রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে জোটের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে ২০-দলীয় জোটের পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় দল, পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ ও মাইনোরিটি জনতা পার্টি জোটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রাতে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদের সভাপতিত্বে ২০ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের আবদুল হালিম, বিজেপি আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, আহমেদ আবদুল কাদের, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ অংশ নেন।

, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, মুসলিম লীগের এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর বিএনপি মহাচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, আজ সৈয়দ এহসানুল হুদার নেতৃত্বাধীন জাতীয় দল, জননেতা মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে রিটা রহমানের নেতৃত্বাধীন পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ এবং সুপ্রীতি কুমার মণ্ডলের নেতৃত্বাধীন মাইনোরিটি জনতা পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০ দলের সঙ্গে যুক্ত হলেন।

এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমদ সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জোট নেত্রী খালেদা জিয়াকে বোর্ডের চিকিৎসকদের সম্মতি ছাড়াই কারাগারে নিয়ে যাওয়ার নিন্দা জানান। নতুন তিন দলকে ২০ দলে যোগ দেওয়ায় তাদের অভিনন্দন জানান অলি আহমদ।

১০ মাস পর জোটের বৈঠকে অলি : জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার কারাবাসের পর দীর্ঘদিন ‘নিশ্চুপ’ থাকা অলি আহমদ প্রথম ২০-দলীয় জোটের বৈঠকে অংশ নিলেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া গ্রেফতারের পর থেকে অলি আহমদ কোনো বৈঠকে অংশ নেননি।

সর্বশেষ খবর