শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের জয় সিরিজ ড্র

মেজবাহ্-উল-হক

মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের জয় সিরিজ ড্র

ক্রিকেটারদের চোখে মুখে খুশির আভা, কিন্তু প্রকাশ করতে পারছেন না। টাইগারদের কাছ থেকে আনন্দের উপলক্ষটা জিম্বাবুইয়ানরা সিলেটেই কেড়ে নিয়েছে। 

ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চার দিনেই টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। সিরিজ ড্র করেছে। অথচ এই জিম্বাবুয়ের কাছে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে হেরে গেছে চার দিনেই। আর দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলেও খেলতে হয়েছে পাঁচ  দিনই। ২১৮ রানের বিশাল এই জয়টা যেন শুধুই স্বস্তির। ‘পুঁচকে’ জিম্বাবুয়েকে হারানোর পর উচ্ছ্বাসের কিছু নেই, বরং পিছিয়ে পড়েও সিরিজে সমতা ফিরিয়ে মানসিক প্রশান্তি পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। জয়ের পর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘প্রথম টেস্ট হারের পর আমরা খুব হার্ট হয়েছিলাম, আমরা চেয়েছিলাম তার বহিঃপ্রকাশ মাঠে দেখাতে। আমার মনে হয় আমরা কিছুটা হলেও করতে পেরেছি।’ ওয়ানডে সিরিজে উড়িয়ে দেওয়ার পর জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্ট ড্র করাটা বাংলাদেশের জন্য হতাশারই। তাই জয়ের পরও মাহমুদুল্লাহর অনুভূতি হচ্ছে, ‘স্বস্তিও নয়, আনন্দও নয়।’ তবে ভীষণ খুশি জিম্বাবুয়ে। ১৭ বছর পর তারা দেশের বাইরে কোনো ম্যাচ জিতেছে (সিলেট টেস্ট)। দাপটের সঙ্গে সিরিজ ড্র করায় ক্রিকেটারদের ওপর সন্তুষ্ট জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আমাদের ক্রিকেটাররা যেভাবে দাপুটে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে তাতে আমি ভীষণ খুশি। এই টেস্টে আমরা পুরোটা সময় পিছিয়ে থাকার পরও দারুণ লড়াই করেছি। ছেলেরা যেভাবে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিয়ে খেলেছে তাতে আমি খুবই সন্তুষ্ট।’ এই টেস্টে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ব্যাটসম্যানরা রানে ফিরেছেন। সাকিব আল হাসান না থাকার পরও স্পিনাররা দাপট দেখিয়েছেন। দুই ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হয়েছেন তাইজুল ইসলাম। দুই টেস্ট মিলে ১১ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজও। তবে ব্যাটসম্যান হিসেবে ঢাকা টেস্টে দাপট ছিল তার। গতকাল জিম্বাবুয়ের ইনিংসে তো ধস নামিয়েছেন তিনিই। ৩৮ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। দুই ইনিংস মিলে ৯৫ রান এবং ৮ উইকেট নিয়ে পারফেক্ট অলরাউন্ডারের ভূমিকা পালন করেছেন। তারপরও ম্যাচ সেরা হতে পারেননি। অবশ্য তার সুযোগও ছিল না। কেন না প্রথম ইনিংসে ২১৯ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলে যে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ অ্যাওয়ার্ডটা বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন মুশফিক। এই টেস্টে জিম্বাবুয়ের জয়ের কোনো সুযোগ ছিল না। শেষ দিনে তাদের দরকার ছিল আরও ৩৬৭ রান। জিততে হলে টেস্টের ইতিহাসকে তোলপাড় করে দিতে হতো। অবশ্য সে ইচ্ছাও ছিল না সফরকারীদের। কিন্তু পঞ্চম দিনেও মিরপুরের উইকেট ব্যাটিং উপযোগী থাকায় ড্র করার স্বপ্ন দেখছিল তারা। প্রথম ইনিংসে দাপটের সঙ্গে ব্যাটিং করার পর টাইগারদের মনে ভয়ও ধরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে মিরাজের স্পিনে ধরাশায়ী হয়ে যায়। জিম্বাবুয়ের শেষ ৫ উইকেট পড়ে যায় মাত্র ৩৮ রানেই। তবে বাংলাদেশ সিরিজ জিততে না পারলেও শেষ ম্যাচে জয়ে বেড়ে গেছে আত্মবিশ্বাস। কয়েকদিন পরেই যে শুরু হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে আরেক সিরিজ। তাই জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে এই জয়ে পাওয়া আত্মবিশ্বাসটা ক্যারিবীয়দের কাজে লাগাতে পারলেই হয়!

সর্বশেষ খবর