শুক্রবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

কালো টাকায় নজর রাখা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

কালো টাকায় নজর রাখা হচ্ছে

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। যারা কালো টাকা ব্যবহার করবে তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে দুদক। এ বিষয়ে কাজ করতে কমিশনের গোয়েন্দা বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘কোন উৎস থেকে নির্বাচনী ব্যয় করা হচ্ছে, তা নির্বাচনের পর খতিয়ে দেখা হবে। দেশের মানুষ বা আমরা, আপনারা কেউ চাই না যে নির্বাচনে কালো টাকা ব্যবহার করা হোক।’ তিনি বলেন, ‘ফ্ল্যাট ও প্লটে কালো টাকা চলে যাচ্ছে। বিষয়টি দুদক অবহিত। আমরা সরকারের কাছে বেশকিছু সুপারিশ পাঠিয়েছি। সরকার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।’ নির্বাচনী হলফনামার বিষয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই জনগণের প্রত্যাশা থাকে নেতাদের চরিত্র পূত-পবিত্র হবে। আমি বলেছিলাম, যারা হলফনামায় তথ্য দেবেন তা যেন সঠিকভাবে দেন। এতে তাদের সম্পত্তি সম্পর্কে মানুষের একটি ধারণা হবে। তারা প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। হলফনামা পাবলিক ডকুমেন্ট। আমাদের গোয়েন্দা ইউনিট সেগুলো সংগ্রহ করছে। আমরা এগুলো বড় বই আকারে সংরক্ষণ করব।’ নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে দুদক কোনো ব্যবস্থা নেবে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা দুদকের বিষয় নয়। তবে এ কারণে কারও সম্পত্তি বেড়ে গেলে আমরা সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’ খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি দুদকের নয়, ব্যাংকের। তবে যদি কেউ জাল-জালিয়াতি করে ঋণ নেন, তাহলে বিষয়টি দুদকের আওতাভুক্ত। এজন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকেই একটি অডিট রিপোর্ট দিতে হবে। অনেকেই আছেন যারা এনবিআরে এক রকম ও ব্যাংক ঋণ নেওয়ার সময় আলাদা অডিট রিপোর্ট দেন। আমরা এসব জালিয়াতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি।’ এর আগে লিখিত বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান জানান, কমিশন ২০০৭ থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৫ হাজার ৮৯টি মামলা দায়ের করেছে। একই সময়ে ৫ হাজার ৫২০টি মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে (বিলুপ্ত ব্যুরো আমলের মামলাসহ)। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৩২১টি মামলায় আসামিদের বিচারিক আদালতে সাজা হয়েছে। দুদকের মামলায় সাজার হার গত বছর ছিল ৬৮ ভাগ। এ হার ক্রমাগত বাড়ছে। কমিশন প্রতিটি মামলা মনিটরিং করছে। মামলার বাদী, সাক্ষী ও প্রসিকিউটরদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হচ্ছে। মতবিনিময় সভায় দুদকের পক্ষে আরও বক্তব্য দেন কমিশনার মোজাম্মেল হক খান ও সচিব সামসুল আরেফিন। সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য দেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম, একুশে টিভির প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, আরটিভির প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশিক রহমান, একাত্তর টিভির প্রধান নির্বাহী মোজাম্মেল বাবু, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন, মানবজমিনের যুগ্মসম্পাদক শামীমুল হক, দেশ টিভির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান, চ্যানেল ২৪-এর বার্তাপ্রধান রাহুল রাহা, ইনডিপেনডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিস সৈকত প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর