সোমবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

উইন্ডিজকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ

আসিফ ইকবাল

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সোনালি ক্রিকেট এখন ধূসর! অতীতের খেরো খাতায় নাম লিখেছে গ্যারি সোবার্স, ভিভ রিচার্ডস, মাইকেল হোল্ডিংয়ের দেশের ক্রিকেট। পরাক্রমশালী দলটি একদা দাপুটে ক্রিকেট খেলে শাসন করেছে গোটা বিশ্ব। দলটির বিপক্ষে মাঠের লড়াইকে এক সময় প্রতিপক্ষ দলগুলো মনে করতো সম্মানের, সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন অস্তমিত সূর্য। দলটির সৌর্য, বীর্য এখন শুধুই অতীত। ধূসর হয়ে যাওয়া সেই দলের বিপক্ষে এখন দাপুটে ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, বলে কয়ে তুলে নিচ্ছে জয়। গতকাল শীতের সন্ধ্যায়

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের ম্যাচটি ছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার ইতিহাস গড়া। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ ওয়ানডে খেলার বিরল রেকর্ড গড়েছেন টাইগার অধিনায়ক। ইতিহাসের পাতায় সোনালি কালিতে লেখা ম্যাচটি হেসেখেলে জিতেছে মাশরাফি বাহিনী। মুশফিকুর রহমানের অসাধারণ হাফ সেঞ্চুরি এবং অধিনায়ক মাশরাফি ও ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজের চোখ ধাঁধানো বোলিংয়ে টাইগাররা ৮৫ বল হাতে রেখে তুলে নিয়েছে ৫ উইকেটের জয়। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আগামীকাল সিরিজ জিততে দ্বিতীয় ম্যাচে নামবে টাইগাররা। আগের দিন টস জয়কে মহাগুরুত্বপূর্ণ বলেছিলেন টাইগার অধিনায়ক। রাতের কুয়াশাকে জয় করতে জিততে চেয়েছিলেন টস। করতে চেয়েছিলেন শুরুতে ব্যাটিং। কিন্তু সব আশা যেমন পূরণ হয় না, তেমনই পূরণ হয়নি টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের স্বপ্ন। তারপরও মাশরাফি বাহিনী দুরন্ত বোলিং করে সফরকারী কারিবীয়দের ৫০ ওভারে বেঁধে ফেলে ১৯৫ রানে। টাইগার বোলাররা এতটাই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন যে, পঞ্চাশের কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের কেউ। সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে সন্মানের জায়গায় নিয়ে যান শাই হোপস। ক্যারিয়ারের ২০০ নম্বর ওয়ানডে খেলতে নেমে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিকে আলোয় আলোকিত করে রাখেন মাশরাফি। ১ ম্যাচ সেরা ক্রিকেটারের স্পেল ছিল ১০-০-৩০-৩! অধিনায়কের পথে হেঁটে ৩ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজও।

সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার ম্যাচে মাশরাফি বাহিনীর টার্গেট ১৯৬ রান। চার ওপেনার নিয়ে সাজানো একাদশে গতকাল ওপেন করেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। দুজনেই দুরন্ত ফর্মে। এশিয়া কাপে ইনজ্যুরিতে পরার আগে তামিম ছিলেন দুরন্ত ফর্মে। জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজে সেঞ্চুরি ছিল দুটি। গতকাল খেলতে নামেন সেপ্টেম্বরের পর।

সঙ্গী লিটনও ফর্মে। এশিয়া কাপের ফাইনালে তিন অংকের জাদুকরি ইনিংস খেলেছিলেন লিটন। দুই ইনফর্ম ওপেনার গতকাল ৩৭ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি। দেশসেরা ব্যাটসম্যান তামিম সাজঘরে ফিরেন ব্যক্তিগত ১২ রানে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে দুই সেঞ্চুরি হাঁকানো ইমরুল সাজঘরে ফিরেন ব্যক্তিগত ৪ রানে। ৪২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে দল যখন কোণঠাসা, তখন তৃতীয় উইকেট জুটিতে বিপর্যয় রোধ করেন লিটন ও মুশফিক। যোগ করেন ৪৭ রান। লিটনের বিদায়ের পর হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ মুশফিক ও সাকিব। চার নম্বর জুটিতে দুজনে যোগ করেন ৫৭ রান। ব্যক্তিগত ৩০ রানে সাকিব ফিরলেও অপরাজিত রয়ে যান মুশফিক। মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে তিনি ১৪.১ ওভার হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। মুশফিক ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ৭০ বলে ৫ চারে। এ নিয়ে চলতি বছরে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে তৃতীয় জয় পেলেন মাশরাফিরা। চলতি বছরে ১৮ ম্যাচে ১২ নম্বর জয় এটা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর