শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভোটের সহিংসতা অব্যাহত

পাঁচ জেলায় হামলা সংঘর্ষ, আহত ৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক

আর মাত্র কয়েক দিন পরই ভোট। ঢাকাসহ সারা দেশেই চলছে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। তবে রাজধানীসহ দেশের প্রায় সব জেলায় ধানের শীষের প্রার্থীরা প্রচারে পিছিয়ে পড়েছেন। ধানের শীষের প্রার্থীদের অভিযোগ, প্রচারণায় প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বাধা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও। রাতে বাসাবাড়িতে হানা দিচ্ছে তারা। এদিকে গতকাল নাটোরসহ অন্তত পাঁচটি জেলায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছে ৪০ জনের মতো এবং গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত ৫০ জনকে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

ঢাকা : রাজধানীর ভাটারা থানার খিলবাড়ির টেক এলাকায় গণসংযোগ করেন ঢাকা-১১ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শামীম আরা বেগম। এ সময় প্রচারকাজে পুলিশ বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। সকাল সাড়ে ১০টায় ভাটারা থানার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের খিলবাড়ির টেক এলাকায় গণসংযোগ করে ধানের শীষে ভোট চান বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম এ কাইয়ুমের সহধর্মিণী শামিম আরা বেগম। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের গণসংযোগে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। তবে পুলিশি বাধার কারণে আমাদের প্রচারকাজ পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পুলিশ আমাদের গণসংযোগের ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছে। পরে তালিকা করে তাদের গ্রেফতার করছে। এভাবে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সরকার মুখে সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে এর কোনো মিল নেই। আজও আমার তিন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’ ঢাকা মহানগরের ১৫টি আসনের মধ্যে ১০টিতে বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে। বাকি পাঁচটি শরিক দলকে ছেড়ে দিয়েছে দলটি। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু হওয়ার পর  থেকে এখনো মাঠে নামতে পারেননি ঢাকা-১২ আসনের প্রার্থী সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা-১০ আসনের আবদুল মান্নান, ঢাকা-১৬ আসনের আহসান উল্লাহ ও ঢাকা-১৫ আসনের প্রার্থী শফিকুর রহমান। তবে এই চার প্রার্থী নিজে নামতে না পারলেও তাদের অনুসারীরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রচারপত্র বিতরণ করছেন। এতেও বাধা  দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। সাইফুল আলম নীরবের বিরুদ্ধে মামলা আছে ২৬৭টি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন,  ‘কোনো কারণ ছাড়াই আমার নির্বাচনী আসনে  নেতা-কর্মীদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। নিরীহ  নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করছে।’ বুধবার রাতে হাতির ঝিল থানা যুবদলের সভাপতি মাসুদ পারভেজ রানার বাসায় পুলিশি তল্লাশি এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া একই ঘটনা ঘটানো হয় শেরেবাংলানগর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সালামত খান সজীব ও শেরেবাংলানগর থানা যুবদলের সভাপতি অপুর বাসায়ও। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে আমি প্রচারে না নামলেও প্রতিদিনই আমার সমর্থকেরা প্রচারপত্র বিতরণ করছেন। এতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।’ জানা গেছে, ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের প্রচারে তিন দিন হামলা হয়েছে। ঢাকা-৮ আসনে মির্জা আব্বাসের প্রচারেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই দুই প্রার্থী গতকাল প্রচারে নামেননি। প্রচারণার হামলার পর নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্নতার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ঢাকা-৪ আসনের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনিও গতকাল প্রচারে নামেননি। সকালে পুরান ঢাকার নয়াবাজারের বিএনপি কার্যালয় থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন ঢাকা-৭ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী মোস্তফা মোহসীন মন্টু। মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে আমরা যেভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, সেভাবে এই ভোটে অংশ নিয়ে আমরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।’ পরে তারা নয়াবাজারের নির্বাচনী ক্যাম্প থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি বংশাল, নাজিরাবাজার, আগা সাদেক লেন, আগামাসি লেন, লালবাগসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এ সময় বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়িতে গিয়ে ভোট চান মোস্তফা মোহসীন মন্টু। দুপুরে মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ এলাকায় প্রচারণা চালান ঢাকা-১৩ আসনের প্রার্থী আবদুস ছালাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণার সময় আদাবর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির হোসেন ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনকে আটক করে পুলিশ। আমরা কীভাবে প্রচার-প্রচারনা চালাব। ঘর থেকে বের হলেই গ্রেফতার হতে হয়। আমাদের নেতা-কর্মীদের পুলিশ যেখানে পাচ্ছে সেখানেই গ্রেফতার করছে। আমরা কোনোভাবেই ভোট চাইতে পারছি না।’ নাটোর : নাটোর-২ (সদর) আসনের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণাসহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর পৃথক হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জেলা জামায়াতের আমিরসহ সাতজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুইজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিএনপির দাবি, নৌকার প্রার্থীর হুকুমে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা বিএনপির সাধারণ সমপাদক আমিনুল হক জানান, গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শহরের সুকুলপট্টি এলাকায় প্রচারণায় যান ধানের শীষ প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন ছবি। এ সময় স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্মীরা হামলা করে। প্রচারণার মাইক ভাঙচুর ছাড়াও হামলায় আহত হন যুবদল নেতা আলমগীর। ছবি তোলার সময় লাঞ্ছিত হন এটিএন নিউজের সাংবাদিক বোরহানউদ্দিন বনি। অন্যদিকে সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া এলাকায় স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় লোহার রড দিয়ে আবুল কালাম আজাদের হাতে ও পায়ে আঘাত করে তারা। হামলায় আবুল কালাম আজাদের হাতের দুটি আঙুল ভেঙে যায়। এ ছাড়া তার পা ফুলে যায়। এর কিছুক্ষণ আগে, একই ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি, অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য আবুল হোসেন গেদুর ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা। গেদুকে মারধর করে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। প্রায় একই সময়ে সিংড়া উপজেলার কালিগঞ্জ ত্রিমোহনী ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক, জেলা জামায়াতের আমির বেলাল উজ্জামানকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় দুবৃত্তরা। বেলা ১১টার দিকে জামানকে হাত-পায়ে পিটিয়ে আচড়াখালী নামক স্থানে ফেলে রেখে যায় তারা। স্থানীয় লোকজন বেলালকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তির পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যদিকে নলডাঙ্গা উপজেলার পৌর বিএনপি নেতা মজিবুলকে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা পিটিয়ে আহত করেছে। এর আগে বুধবার রাতে শহরের স্টেশন এলাকায় এন এস সরকারি কলেজ মাঠের কাছে যুবদল নেতা মোজাম্মেল হক বাবুকে পিটিয়ে জখম করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ধানের শীষ প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন ছবি দাবি করেন, ধানের শীষ প্রতীকে কোনো প্রচারণা যাতে না হয়, কেউ যেন প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে না পারেন, কেউ যেন ভোট দিতে না আসেন সে লক্ষ্যেই আতঙ্ক আর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হচ্ছে। নোয়াখালী : জেলার কবিরহাটে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী প্রচারণার দুটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় হামলা ও ভাঙচুর করছে দুর্বৃত্তরা। হামলায় ছয়জন আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধানশালিক ও ভাটিয়া ইউনিয়নে গতকাল রাত পৌনে ৮টায়। এদিকে অভিযোগ থেকে জানা যায়, গতকাল সকাল ১০টার দিকে মানিকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে নোয়াখালী-৫ আসনে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের এপিএসের ছোট ভাই সিরাজপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুর রহমান শুভকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সর্থকরা। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অন্যদিকে গতকাল নিজ নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে পথসভা করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নোয়াখালী-৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চৌধুরীর হাটে দুর্বৃত্তরা বেশ কয়েকটি ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ ও বিজিবির প্রহরায় চৌধুরীর হাট, মেহেরুন্নেছা, চরপার্বতী ও মৌলভীবাজারে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন ব্যারিস্টার মওদুদ। নেত্রকোনা : নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনের বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার কায়সার কামালের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলার প্রতিবাদে অনশন করেছে স্থানীয় বিএনপি। গতকাল বেলা ১টা থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে অনশন অংশ নেন কায়সার কামাল। কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে মাটিতে বসে এই অনশন করেন তারা। দীর্ঘ চার ঘণ্টা পর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেনের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কায়সার কামাল অনশন ভেঙে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। গতকাল বেলা ১২টার দিকে কলমাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে প্রচারণার সময় তাদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসনে কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী জলি তালুকদারের ওপর ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ : জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার দাইপুখুরিয়া এলাকায় নৌকা সমর্থকের ওপর বিএনপি কর্মীদের হামলা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হামলার শিকার আবদুল জাব্বার বাদী হয়ে গতকাল ১৬ জনের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নের এখলাসপুর এলাকায় বিএনপির একটি নির্বাচনী মিছিল হচ্ছিল। মিছিলের পাশ দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন নৌকা প্রতীকের সমর্থক আবদুল জাব্বার। এ সময় তার ওপর হামলা চালায় মিছিলকারীরা। তারা জাব্বারের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করে। পরে আবদুল জাব্বারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঝালকাঠি : জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনে বিএনপি প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মনিরুল ইসলাম নূপুরকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে শহরের ব্র্যাক মোড় এলাকার বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। অন্যদিকে নিজ বাসা থেকে গাভা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়ার সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুকে আটক করা হয়েছে। বগুড়া : বগুড়ার শেরপুরে বুধবার ও গতকাল বিএনপির পাঁচ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : জেলার বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলমকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে ইউনিয়নের কেনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ইসলামপুর ফাঁড়ি পুলিশ তাকে আটক করে। একই সময় পুলিশ যুবদল নেতা মনির হোসেন ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রতনকে না পেয়ে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের লোকজন তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং মহিলাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। স্থানীয় বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ইসলামপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতারা তাণ্ডব চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করে। কুমিল্লা : কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের বিএনপি প্রার্থী আমিন উর রশীদ ইয়াছিন গতকাল নগরীর নিজ বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘১০ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পর কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় তিনটি আর সদর দক্ষিণ থানায় পাঁচটিসহ মোট আটটি গায়েবি মামলা করা হয়েছে। এতে তাদের ২০০ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এদিকে কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর আসনের বিএনপির প্রার্থী কে এম মুজিবুল অভিযোগ করেছেন, ১৪ ডিসেম্বর প্রতিপক্ষ মুরাদনগর থানার সামনে তার গাড়িবহরে হামলা করেছে। এখন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে উল্টো অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তার ছোট ভাইয়ের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করা হয়েছে। তারা তার ছোট ভাই জুন্নুন বসরীর একটি এডিট করা ছবি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়। অথচ জুন্নুন বসরী ওই দিন মালেয়শিয়া ছিলেন। বাগেরহাট : বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া) আসনের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে নির্বাচনী কার্যালয়ের বেড়া, পোস্টার, প্যানা ও বেশ কিছু প্লাস্টিকের চেয়ার পুড়ে গেছে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে। বুধবার গভীর রাতে সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের সোতাল গ্রামের ওই নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আওয়ামী লীগ আগুনের ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করেছে। আটক ব্যক্তিদের সবাই বিএনপির সমর্থক। তবে তাদের পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। এদিকে আওয়ামী লীগের করা অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিএনপি। এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে বাগেরহাট মডেল থানায় বারুইপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কমলেশ ভট্টাচার্য্য বাদী হয়ে জামায়াত-বিএনপির ১১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। বাগেরহাট-২ আসনে বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম শেখ সারহান নাসের তন্ময় আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম। এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ সারহান নাসের তন্ময়ের প্রচার মিছিলে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় কামাল হোসেন খান নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ সমর্থক। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাইনবোর্ড-মোরেলগঞ্জ মহাসড়কের কচুয়া উপজেলার যশোরদি এলাকায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।  দিনাজপুর :  পার্বতীপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মো. ইউনুস আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল পৌর শহরের ইব্রাহীম নগরের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সর্বশেষ খবর