শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আবাহনীকে হারিয়ে ফাইনালে বসুন্ধরা কিংস

আসিফ ইকবাল

গোলবারে চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন! আনিসুর রহমান জিকো; বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক। দীর্ঘদেহী নন। কিন্তু গতকাল স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রূপকথার পঞ্চ ভুতের দীর্ঘদেহী ভুতের রূপ নিয়েছিলেন! আনিসুর জিকো দীর্ঘদেহী দৈত্যের মতো দুই হাত দুদিকে ছড়িয়ে গোলপোষ্ট এমনভাবে আগলে রেখেছিলেন, আবাহনীর কারমেন্স বেলফোর্ট ও ইমতিয়াজ সুলতান জিতু নিশানা খুঁজে পাননি। আনিসুর জিকো শুধু গোলবার আগলে ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর দুই দুটি শট আটকাননি, টাইব্রেকারের সর্বশেষ শটে গোল করে রংধনুর রঙে রাঙিয়েছেন বসুন্ধরা কিংসকে। টাইব্রেকারে তার দুরন্ত পারফরম্যান্সে ৭-৬ গোলে জয় তুলে মৌসুমের দ্বিতীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে নবাগত বসুন্ধরা কিংস। ২৪ ডিসেম্বর ফাইনালে শিরোপা উৎসবে মাততে মুখোমুখি হবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের। বসুন্ধরা ও আবাহনীর দ্বিতীয় সেমিফাইনাল নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র ছিল। টাইব্রেকারে প্রথম ৫ শটের চারটি করে গোল করে বসুন্ধরা ও আবাহনী। এরপর সাডেন ডেথের তিনটিতেই গোল করে ফাইনালিষ্ট বসুন্ধরা। আবাহনী মিস করে অষ্টমটি। টাইব্রেকারে বসুুন্ধরার পক্ষে গোল করেন কিরগিজস্তানের বখতিয়ার দুইশভেকভ, ব্রাজিলের মার্কোস ভিনিসিয়াস, হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস ও মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, রোকোনুজ্জামান কাঞ্চন, মাসুক মিয়া জনি ও আনিসুর রহমান জিকো। মিস করেন বিশ্বকাপের ফুটবলার ড্যানিয়েল কলিনড্রেস। বসুন্ধরার চার ফুটবলার প্রথম চার শটের সবগুলোতেই গোল করেন। পঞ্চমটি মিস করেন কলিনড্রেস। আবাহনীর গোলগুলো করেন মাহি সাইঘানি, ওয়ালি ফয়সাল, রুবেল মিয়া, সানডে চিজোবা, রায়হান হাসান ও টুটুল হোসেন বাদশাহ। গোল মিস করেন বেলফোর্ট ও জিতু। ফেডারেশন কাপের দুঃস্বপ্নের ফাইনাল ভুলে থাকতে শীতের সন্ধ্যায় দুদলই উপভোগ মাচ খেলেছে। আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে জমে উঠেছিল ম্যাচটি। ইনজুরি কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর বসুন্ধরার পক্ষে ফের মাঠে নামেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার মার্কোস ভিনিসিয়াস দ্য কস্টা। কিন্তু অসুস্থতার জন্য খেলেননি স্প্যানিশ ফুটবলার জর্জ গোটর ব্লাস। মার্কোসের উপস্থিতিতে নবাগত দলটির আক্রমণভাগ অনেকবেশি সংগঠিত ছিল। তবে প্রথমার্ধে বলের নিয়ন্ত্রণে ছিল ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। তবে গোল পায়নি। প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। দ্বিতীয়ার্ধে বলের নিয়ন্ত্রণ নেয় অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। ৭১ মিনিটে দারুণ এক গোলে এগিয়েও যায়। মধ্যমাঠ থেকে বল ধরে বদলি খেলোয়াড় মতিন মিয়া ডান পায়ের জোরালো শটে পরাস্ত করেন আবাহনীর গোলরক্ষক শহীদুল আলমকে (১-০)। ওই গোলের পর খুব বেশি সময় উৎসবমুখর থাকতে পারেনি নবাগত দলটি। ৮২ মিনিটে অসাধারণ এক হেডে সমতা আনে আবাহনী। সমতা আনেন দলটির হাইতির স্ট্রাইকার বেলফোর্ট (১-০)। সমতা আসার পর খেলায় গতি বেড়ে যায়। কিন্তু গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও আর গোল হয়নি। ফলে টাইব্রেকারে গড়ায় দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। চলতি মৌসুমে দুদল এখন পর্যন্ত দুবার পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে বসুন্ধরা হেরেছিল ১-৩ গোলে। স্বাধীনতা কাপে গতকাল প্রতিশোধ নিল নবাগত দলটি।

সর্বশেষ খবর