শনিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে

একে অপরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন, নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো ও হামলার অভিযোগ

গোলাম রাব্বানী

পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাপা, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের প্রার্থীরা। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন, নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো ও হামলার অভিযোগ তুলছেন। গত ১০ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে রিটার্নিং অফিসার, জেলা নির্বাচন অফিস ও ঢাকায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে শত শত অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা, মামলা-হয়রানি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি। যদিও নির্বাচন কমিশন এসব অভিযোগের কোনো পরিসংখ্যান দিতে পারছে না। তবে প্রার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইসি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করে ইসিকে জানাতেও বলা হচ্ছে। আবার অনেক আবেদন ইসি কর্মকর্তাদের টেবিলেই পড়ে আছে। নির্বাচন কমিশন থেকে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং অফিসারকে পাঠানো বেশ কিছু চিঠিতে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। আবার কিছু তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এসব চিঠিতে দেখা গেছে, ঢাকা-১৬ আসনের প্রার্থী মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ হাসানসহ তার নেতা-কর্মীদের হুমকি এবং ভয়ভীতি প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে ইসি। ঢাকা-২ আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার ইফরান ইবনে অমির আবেদনের বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিয়ে ইসিকে জানাতে বলা হয়েছে। ঢাকা- ৯ আসনের প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে ইসিতে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলছে ইসি। ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন জাপা প্রার্থী ইউনুস আলী আকন্দ। এ বিষয়েও ব্যবস্থা নিতে বলেছে ইসি। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সহকারী সচিব মো. লুত্ফুল কবীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি প্রার্থীরা যেমন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। তেমনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাও প্রতিপক্ষ বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। জাপা প্রার্থীরা অভিযোগ করছেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। ঢাকা-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরীর পক্ষে তার প্রধান সমন্বয়কারী আবদুল মান্নান সিইসির কাছে অভিযোগ করেছেন। এতে তিনি প্রতিপক্ষ আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালানোর অভিযোগ তুলেছেন। এ ছাড়া অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন নীলফামারী-১ আসনের জাপা প্রার্থী জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, ঢাকা-১০ আসনের বিএনপি প্রার্থী আবদুল মান্নান, গাজীপুর-৪ আসনের শাহ রিয়াজুল হান্নান, ঢাকা-৯ আসনের আফরোজা আব্বাস, ঢাকা-১৯ আসনের দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক এমপি মো. হাবিবুল ইসলাম হাবিব তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। এ ছাড়া রাজশাহীতে দলীয় নেতাদের তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির অভিযোগ, গত বুধবার একজন থানা যুবদলের সভাপতিকে তুলে নিয়ে পায়ে গুলি করা হয়েছে। একই দিন থেকে ‘গায়েবি’ মামলায় কারাগারে যাওয়া ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকা এক কর্মীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের বিএনপির প্রার্থী শফিকুল হক মিলনের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন বরাবর এসব অভিযোগ করা হয়েছে। সাতক্ষীরা-১ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মুস্তফা লুত্ফুল্লাহর বিরুদ্ধে নির্বাচনী পোস্টারে দলীয় প্রধান রাশেদ খান মেননের পরিবর্তে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহারের অভিযোগ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) সৈয়দ দিদার বখত নামে একজন এ অভিযোগ করেন।

নৌকায় ভোট চাওয়া ওসির প্রত্যাহার দাবি : নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চাওয়ায় কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) প্রত্যাহার দাবি করেছেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব। গতকাল বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বরাবর লিখিত এক অভিযোগে কলারোয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহার দাবি করেন এ প্রার্থী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর