মঙ্গলবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভোটের পথ বন্ধই থাকল ২০ প্রার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটের পথ বন্ধই থাকল ২০ প্রার্থীর

প্রার্থিতার ওপর হাই কোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশের বিষয়ে আপিল বিভাগে গিয়েও কাঙ্ক্ষিত ফল পাননি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১২ প্রার্থী। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী ছাড়া বাকিরা সবাই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। গতকাল তাদের প্রত্যেকের আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দেন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান। অন্যদিকে পাঁচ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন সংক্রান্ত হাই কোর্টের সিদ্ধান্তও বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। এ নিয়ে আদালতের আদেশে গতকাল পর্যন্ত মোট ২০ প্রার্থীর নির্বাচন করার বিষয়টি আটকে গেছে। এসব প্রার্থিতা আটকে যাওয়ায় ১৩টি আসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রার্থী নেই। আদালতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও মোতাহার হোসেন সাজু, রিটকারী পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক ও বিএনপি নেতাদের পক্ষে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। গতকাল চূড়ান্তভাবে প্রার্থিতা স্থগিত হওয়া প্রার্থীরা হলেন— ঢাকা-১ আসনে খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা-২০ আসনে তমিজ উদ্দিন, জামালপুর-৪ আসনে ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম, জয়পুরহাট-১ আসনে ফজলুর রহমান, ঝিনাইদহ-২ আসনে মো. আবদুল মজিদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে ইঞ্জিনিয়ার মো. মোসলেম উদ্দিন, রাজশাহী-৬ আসনে চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবু সাঈদ চাঁদ, বগুড়া-৭ আসনে মোরশেদ মিল্টন, চাঁদপুর-৪ আসনের এম এ হান্নান এবং নীলফামারী-৪ আসনে মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার। এ ছাড়া ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমন এবং রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবলুর প্রার্থিতাও স্থগিতই থাকছে। তারা দুজনই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। আপিল বিভাগে প্রার্থিতা স্থগিত হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে নীলফামারী-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী মেয়র আমজাদ হোসেন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে রিট করে প্রার্থিতা ফিরে পেলেও আপিল বিভাগে এসে আটতে গেলেন।

এর আগে বগুড়া-৩ আসনে আবদুল মুহিত তালুকদার, বগুড়া-৭ আসনে সরকার বাদল, মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বেগম আফরোজা খান, সিলেট-২ আসনে তাহসিনা রুশদীর লুনা, জামালপুর-১ আসনে এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, দিনাজপুর-৩ আসনে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, রাজশাহী-৫ আসনে নাদিম মোস্তফা ও রংপুর-৫ আসনে বিএনপি প্রার্থী জামায়াত নেতা গোলাম রব্বানী।

৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের সিদ্ধান্তও বহাল :  মনোনয়ন স্থগিতাদেশ বহাল রাখা ছাড়াও চেম্বার আদালত প্রতীক বরাদ্দ সংক্রান্ত হাই কোর্টের সিদ্ধান্তও বহাল রেখেছে। হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা প্রার্থীদের আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ‘নো অর্ডার’ দেন। ফলে হাই কোর্টের আদেশ বহাল থাকছে বলে জনিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। এর আগে পৃথক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ তাদের ধানের শীষ প্রতীক দিতে আদেশ দিয়েছিল। হাই কোর্টের আদেশে ধানের শীষ প্রতীক পাওয়া প্রার্থীরা হলেন— মানিকগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচনে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীরের পরিবর্তে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলুকে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। সে আদেশটিই বহাল আছে চেম্বার আদালতের আদেশে। নাটোর-১ আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনজুরুল ইসলাম ওরফে বিমলের পরিবর্তে ধানের শীষ প্রতীক দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের সহধর্মিণী অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরিনকে। নওগাঁ-১ আসনে নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ডা. ছালেক চৌধুরীর পরিবর্তে নওগাঁ জেলা বিএনপির সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে, বগুড়া-৩ আসনে আবদুল মুহিত তালুকদারের পরিবর্তে মাসুদা মমিনকে ও রাজশাহী-৫ আসনে নাদিম মোস্তফার পরিবর্তে অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়ার নির্দেশ ছিল হাই কোর্টের। গতকাল আপিল বিভাগেও এই আদেশ বহাল থাকল।

 

সর্বশেষ খবর