মঙ্গলবার, ৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সততা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার মন্ত্রীদের

দেশপ্রেম থেকেই কাজ করব : মুস্তফা কামাল
প্রধানমন্ত্রীর গতি অনুসরণ করব : শ ম রেজাউল
দুর্নীতিমুক্ত করা আমার চ্যালেঞ্জ : সাইফুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশপ্রেম, সততা এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীরা। জনগণের আস্থা অর্জনে অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন এবং আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।

আ হ ম মুস্তফা কামাল : অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন,  দেশের প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসা থেকেই কাজ করতে হবে। গতকাল অর্থমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গভবনে শপথ নিয়েই অর্থ মন্ত্রণালয়ে এসে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। পরে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গেও কথা বলেন নতুন এই অর্থমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েই কাজ করতে চাই। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যারা সফল তারাই চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন। আমিও তাই পছন্দ করি। সামনের দিনগুলো হবে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের। আবার নতুন এই বছরটা হবে সুখকর। যা ইতিমধ্যে বিশ্ব ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামও বলেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, আপনারা প্রজ্ঞাবান, আপনারা সমহিমায় উজ্জ্বল। আপনারা কাজ করতে ভালোবাসেন। সারা বিশ্বে আলোচিত একটি নাম বাংলাদেশের অর্থনীতি। এটা আপনাদেরই অর্জন। সবাইকে আয়কর দিতে হবে। মানুষ দিতেও চায়। আপনাদেরকে মানুষের কাছে যেতে হবে। আমাদেরকে উইন উইন সিচুয়েশনে কাজ করতে হবে। কেউ হারবে না। কেউ ঠকবে না। তারা সরকারের কাছ থেকে কী কী নিতে চায় সেটাও দেখতে হবে। আমাদেরকেও দিতে হবে। তিনি বলেন, কারও কোনো কিছু গোপন না রেখে কাজ করতে হবে একই সঙ্গে। আমাদেরকে অগ্রাধিকারের তালিকা করতে হবে। কোন কাজ করলে কম খরচে বেশি সাশ্রয় হবে। সবকিছু প্রথাগতভাবেই চলবে। খোলামেলা আলাপ করে আমরা পরিকল্পনা নেব। কর্মপরিকল্পনা সাজাব নতুন করে। এ বছর আমরা অসাধারণ ভালো করব অর্থনীতিতে। এখানে আমাদের এনবিআর চেয়ারম্যান আছেন, কোথায় আমাদের কী সমস্যা আছে সেটা তিনি ভালো জানেন। তিনি আরও বলেন, আয়কর আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার ভয়ভীতি দেখানো যাবে না। মানুষের কাছে যেতে হবে। এজন্য এনবিআরকে জনবল বাড়াতে হবে। অসংখ্য জনবল বাড়াতে হবে। ৫০ হাজার হলেও কোনো সমস্যা নেই। আমি বলছি ৫০ হাজার লোক যুক্ত করেন। দোকানে দোকানে স্ক্যানার লাগান। ক্যাশ রেজিস্টার বসান। সব উপজেলাতে অফিস করেন। প্রয়োজনে প্রতি উপজেলায় একাধিক কর অফিস করেন। সেই সঙ্গে শতভাগ পেমেন্ট করতে হবে অনলাইনে। এরপর নতুন অর্থমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শ ম রেজাউল করিম : মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর গতি ও সততাকে পাথেয় হিসেবে নিতে চান সদ্য দায়িত্ব পাওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার সাত দিন পরই মন্ত্রী হতে পেরে আনন্দিত বলেও জানান তিনি। গতকাল মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি এসব কথা বলেন।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন, এটা অবশ্যই আনন্দের। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমার নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণের প্রতিও আমার গভীর কৃতজ্ঞতা।’ তিনি বলেন, ‘যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত বড় ও চ্যালেঞ্জিং একটি মন্ত্রণালয়। বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, কাজের পরিসরও অনেক। এসব অনিয়ম দূর করা হবে আমার প্রধান চ্যালেঞ্জ।’

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ : দীর্ঘ পাঁচ বছর সততার সঙ্গে আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ করেছেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। নিজ মন্ত্রণালয়ের সব দফতরকে এবং মাঠের প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে এবং কাজের গতি আনতে সব রকম চেষ্টা করেছেন তিনি। এরই ফসল পেয়েছেন পদোন্নতি পেয়ে পূর্ণ মন্ত্রী হওয়ার মধ্য দিয়ে। তাও আবার দায়িত্ব পেয়েছেন একই মন্ত্রণালয়ের।

পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে গতকাল বিকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে শপথ নিয়েছে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। খুব ভালো লাগছে। সততার সঙ্গে ভালো কাজ করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটা পুরস্কার দিয়েছেন। এখন আমার সামনে দুটো চ্যালেঞ্জ। একটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের কাজে যে গতি এনেছিলাম তার অটোমেশনটাকে আরও কার্যকরভাবে একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী : আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে সচেষ্ট থাকব। প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতিফলন ঘটাতে চাই। গতকাল বিকালে শপথ গ্রহণের পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা ন্যায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে যথাযথভাবে পালন করব। প্রধানমন্ত্রীর মুখ উজ্জ্বল করব। দলের মর্যাদা ও দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দেবেন, তা মেনেই আগামী দিনে কাজ করব। এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা দরকার।

তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর দেশবাসী আমাদের যেভাবে ভোট দিয়েছেন, সে আশা যেন পূরণ করতে পারি সেজন্য দেশবাসীর দোয়া চাই। কাজের মাধ্যমেই মানুষের চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে চাই।

সর্বশেষ খবর