সোমবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

দিনভর ছিল পোশাক শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

সাভার প্রতিনিধি

সদ্য ঘোষিত মজুরির বৈষম্য নিরসনের দাবিতে ঢাকার আশুলিয়ায় গতকালও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে পোশাকশ্রমিকরা। সকাল সোয়া ৮টার দিকে অর্ধশতাধিক কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর এলাকায় অন্তত ১৫টি যানবাহন ভাঙচুর করেছে। নরসিংহপুর, জামগড়া, কাঁঠালতলা, ঘোষবাগ, ইউনিকসহ ১০টি স্পটে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে যাত্রী, পুলিশ, শ্রমিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রায় আড়াই ঘণ্ট্ার ওই মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আশুলিয়া এলাকার ৫১টি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন পোশাক কারখানার সামনে টহল দিচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে রয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও র‌্যাব। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়ার ছয়তলা এলাকায় হামিম গ্রুপের শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে ভাঙচুরের চেষ্টা করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। শ্রমিকরা জানান, সকালে মজুরিবৈষম্যের অভিযোগ তুলে অবিলম্বে অপারেটরদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করা আশুলিয়ার জামগড়া ছয়তলা এলাকার বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

একই দাবিতে আশুলিয়ার কাঁঠালতলা এলাকার দি রোজ গার্মেন্টসের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে কয়েক হাজার শ্রমিক। এতে বন্ধ হয়ে যায় ওই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের পুলিশ সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন শ্রমিক। একপর্যায়ে শ্রমিকরা আশপাশে অবস্থান নেয়। গোটা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল তাৎক্ষণিক ছুটি ঘোষণা করে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা। শিল্পপুলিশের পরিচালক সানা শামিনুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নতুন মজুরিকাঠামোর বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে চলা শ্রমিক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে কোনো স্বার্থান্বেষী মহলকে নাশকতার সুযোগ দেওয়া হবে না। আন্দোলনের নামে কেউ যদি ব্যক্তিস্বার্থ বা গোষ্ঠীস্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে, তাকে বা তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর বা অবরোধ করা যাবে না। আর পরিস্থিতি খারাপ হলে, নাশকতা হলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। শ্রমিকদের দাবির বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ কাজ করছে। শিগগিরই তাদের দাবি মিটিয়ে দেওয়া হবে।’ শ্রমিকদের সড়ক ছেড়ে দিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি পোশাক কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক দিপু বলেন, পোশক শ্রমিকদের ভাঙচুর বা অবরোধের ঘটনায় সাভার মডেল ও আশুলিয়া থানায় ১০টি মামলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর