সোমবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

আসামি ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা সংঘর্ষে নিহত ১

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুরে পুলিশ-এলাকাবাসী সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। গত শনিবার রাতের ওই ঘটনায় আহত বন্দর থানার এসআই মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার করার পর আসামি পক্ষের লোকজন তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে জানায় পুলিশ। পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় পুলিশের ওপর হামলা করে গাড়ি ভাঙচুর ও শটগান ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বন্দর থানার এসআই মো. আলী বাদী হয়ে ২৪ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ২ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে। এ ছাড়া একজন নিহতের ঘটনায় পৃথক আরেকটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তিনি জানান, এ ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত চলছে। সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় কোনো পুলিশ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বন্দর থানা পুলিশের একটি দল উপজেলার মদনপুরের চানপুর এলাকায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার করতে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান সমর্থক দিপু ও সুজন নামের দুই আসামিকে আটক করে। খবর পেয়ে দিপু ও সুজনের সহযোগীরাসহ এলাকার লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সময় পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ও আত্মরক্ষার্থে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে আশিকুর রহমান নামের গার্মেন্টস কর্মী নিহত ও বাবুল নামের এক গুলিবিদ্ধ যুবককে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সংঘর্ষের সময় পুলিশের এসআই মোহাম্মদ আলী, কনস্টেবল দেবাশীষ, কনস্টেবল মনোয়ার, মোহনসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন। এ সময় পুরো এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায় এবং রিফাত ও নুরনবী নামের দুজনকে গ্রেফতার করে। নিহত আশিক লালমনিরহাট জেলার শহীদুল ইসলামের ছেলে। সে বন্দর উপজেলার চানপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করত। গুলিবিদ্ধ আহত বাবুল কুমিল্লার বাইতোলা গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মদনপুর পরিবহন স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে গত ১৮ নভেম্বর স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান ও আমির হোসেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলা হয়।

ওসি প্রত্যাহার : এ ঘটনায় ওসি আজহারুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। গতকাল বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার এ নির্দেশ দেন।

সর্বশেষ খবর