কয়েক দিন আগেও তাকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের জটলা লেগেই থাকত। ঢাকা থেকে সিলেট ফিরলে ভিড় লেগে থাকত ওসমানী বিমানবন্দরে। ভিআইপি লাউঞ্জে পড়ে যেত হুড়োহুড়ি-ধাক্কাধাক্কি। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে উঠত বিমানবন্দর এলাকা। মোটর শোভাযাত্রা সহকারে তাকে নিয়ে আসা হতো বাসায়। সেই আবুল মাল আবদুল মুহিত (সাবেক অর্থমন্ত্রী) গতকাল যখন সিলেট ফিরলেন তখন তার হুইল চেয়ারে ধরার মতোও ছিল না কেউ। সাবেক এপিএস জনিকে নিয়ে একা একাই ওসমানী বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি। মন্ত্রী শব্দের সঙ্গে ‘সাবেক’ শব্দ যুক্ত হওয়ার পর দূরে সরে গেছে সুবিধাভোগী চক্রও। গেল মন্ত্রিসভার প্রতাপশালী অর্থমন্ত্রী মুহিতকে ঘিরে সব সময়ই আনাগোনা থাকত সুবিধাভোগী চক্রের। এদের অনেকেই গেল ১০ বছরে দলীয় পরিচয়ের ছদ্মাবরণে অর্থমন্ত্রীকে ব্যবহার করে ‘কামাই’ করেছেন কোটি কোটি টাকা। সরকারি বিভিন্ন অফিসে প্রভাব বিস্তার, তদবির ও নিয়োগ বাণিজ্য এবং ঠিকাদারিসহ অনেকভাবেই এই চক্রটি আখের গুছিয়েছে নিজেদের। কিন্তু মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে না পড়তেই সেই সুবিধাভোগীরাও ভুলে গেছে মুহিতকে।
মুহিতকে দিয়ে আর ‘ফায়দা হাসিল’ হবে না এমনটা বুঝেই তারা কেটে পড়েছেন ইতিমধ্যে। গতকাল বেলা ১টা ৫০ মিনিটের সময় নভোএয়ারের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে সিলেট আসেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিমান থেকে নেমে হুইল চেয়ারে করে তাকে নিয়ে আসা হয় ভিআইপি লাউঞ্জে। জনশূন্য ভিআইপি লাউঞ্জ তখন অনেকটা অপরিচিতই মনে হচ্ছিল মুহিতের কাছে।
চিরচেনা পরিচিতমুখগুলো দেখতে না পেয়ে অনেকটা হতাশই মনে হচ্ছিল মুহিতকে। এতদিন যাদের ‘কাছের মানুষ’ হিসেবে জানতেন তাদের মুখোশের অন্তরালের চেহারাটা হয়তো তখন ভাসছিল তার মনোচোখে। তবে তথাকথিত সেই ‘কাছের মানুষদের’ মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন বাফুফের কার্যনির্বাহী সদস্য ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম। ভিআইপি লাউঞ্জের গেটে একমাত্র তিনিই রিসিভ করেন। পরে সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত বিমানবন্দর থেকে চলে আসেন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। সেখানে বসে দেখেন সিলেট সিক্সার্স ও ঢাকা ডায়নামাইটসের ম্যাচ।