সোমবার, ২১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

পুনঃতফসিল বন্ধ করতে হবে

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুনঃতফসিল বন্ধ করতে হবে

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, খেলাপি ঋণ কমাতে হলে সবার আগে পুনঃ তফসিলিকরণ বন্ধ করতে হবে। শুধু মেরিট রয়েছে এ ধরনের কেসই পুনঃ তফসিল হতে পারে। গণহারে  পুনঃ তফসিল বন্ধ করতে হবে। এর পাশাপাশি কোনো ঋণখেলাপি কোর্টে রিট আবেদন করলে তা দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। করপোরেট গ্যারান্টির নামে যেসব অনিয়ম সংঘটিত হচ্ছে সেগুলো বন্ধ করতে হবে। শনিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে। এর মূল কারণ ব্যাংকগুলোর পুরো কাঠামোতে ফাটল ধরেছে। পরিচালনা পর্ষদ থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনা, কর্মচারীদের মধ্যে দুর্বৃত্তায়ন ঢুকেছে। এ ধরনের ঘটনার পর যে শাস্তি দেওয়া উচিত ছিল কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। ফলে এই ফাটলের আঘাত পুরো ব্যাংকিং খাতেই ছড়িয়ে পড়ছে। এতে দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের উৎসাহ দেওয়া হয়েছে এবং যারা সৎ তারাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে একই ধরনের প্রভাব বিস্তার করছে। আমাদের হয়েছে সিস্টেমেটিক ডিজিজ। এক জায়গায় নয়, এটা সর্বগ্রাসী। পুরো সিস্টেম নষ্ট হয়ে গেছে। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, বাজার এবং লোকাল লেভেলে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলোর কার্যকারিতাই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ব্যাংকের যে অবস্থা, এগুলো সাধারণ মানুষের তেমন কোনো উপকারে আসছে না। মানুষ দিন দিন ব্যাংকের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে। ব্যাংকগুলো এখন কিছুসংখ্যক মানুষের কল্যাণে কাজ করছে বলে মনে করেন সালেহউদ্দিন। তিনি বলেন, ব্যাংক প্রতিযোগিতামূলকভাবে কাজ করছে না। অনেকটা সিন্ডিকেট পদ্ধতি এখানে গ্রাস করেছে। এই পদ্ধতির কারণে নতুন উদ্যোক্তারা কোনো সুফল পাচ্ছেন না। অনেকে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সব বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিতে হবে। আমি কিন্তু এর পক্ষপাতী নই। বরং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে যদি সততা-স্বচ্ছতা নিয়ে আসা যায়, তবে প্রতিযোগিতামূলক আবহ সৃষ্টি হবে ব্যাংকিং খাতে। ব্যাংকগুলো যদি উদ্যোক্তা তৈরি না করে তাহলে নতুন শিল্পায়ন হবে না। এখন সময় এসেছে কীভাবে এই খাতে কঠোর শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যায়। রাজনৈতিক বিবেচনায় পর্ষদ গঠন করে কিংবা ঋণ দিয়ে শৃঙ্খলা ফিরবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর