সোমবার, ২১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

খেলাপি কমাতে মনিটরিং শক্ত করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

খেলাপি কমাতে মনিটরিং শক্ত করতে হবে

মাহবুব আহমেদ

ব্যাংক খাতের সংস্কারে সরকারের অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আহমেদ বলেছেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে নির্বাচিত সরকারকে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে- ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা, সরকারের আয় বাড়ানো, প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বৃদ্ধি, মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির সমন্বয় এবং প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে উদ্ভাবনী দক্ষতা। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বিশেষ করে খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকার কমিটি গঠনের যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। এর ফলে মন্দ ঋণ গ্রহীতাদের কাছে একটা বার্তা যাবে যে, সরকার এ বিষয়ে কঠোর। বাণিজ্য ও পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দায়িত্ব পালনকারী এই আমলা বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ আর্থিক খাতে একটি বড় সমস্যা। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে পরিদর্শন কার্যক্রম রয়েছে তা আরও শক্তিশালী করতে হবে। মনিটরিংয়ে দুর্বলতা দূর করে এটা আরও শক্তিশালী করতে হবে। ব্যাংকিং আইন বাস্তবায়নে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নতুন অর্থমন্ত্রী খেলাপি ঋণ আদায়ে কমিটি গঠনের কথা বলেছেন। আশা করছি এ থেকে একটা সুফল পাওয়া যাবে। সরকারের আয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক এই সিনিয়র সচিব আরও বলেন, চলমান অগ্রগতি ধরে রাখতে হলে সরকারের আয় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য ভ্যাট আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার। এ ছাড়া সরকারের পরোক্ষ আয়ের বদলে প্রত্যক্ষ আয় থেকে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে রাজস্ব খাতের সংস্কার কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে।

আয় বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারের ব্যয় করার সক্ষমতা বাড়ানোরও পরামর্শ দেন মাহবুব আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের আরও একটি দুর্বলতা হচ্ছে অর্থ ব্যয় করতে না পারা। এ কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা যায়। গুণগত মান বজায় রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বাড়াতে পারলে সরকারের ব্যয় করার সক্ষমতাও বাড়বে।

বর্তমান সরকারের আমলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ থেকে ৮ শতাংশে উন্নীত হওয়ার বিষয়টিকে অর্থনীতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে সাবেক এই সিনিয়র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে একটা সাধারণ সমস্যা দেখা যায়। মধ্যম আয়ের দেশগুলোর প্রান্তিক উৎপাদনশীলতা একটা পর্যায়ে গিয়ে হ্রাস পায়। ফলে প্রবৃদ্ধি হার আর বাড়ে না। বাংলাদেশের সামনে এই চ্যালেঞ্জ আসার আগেই প্রস্তুত থাকতে হবে। আমাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিকল্প হিসেবে ইনক্রিমেন্টাল ক্যাপিটাল রেশিও আউটপুট কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এ জন্য উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও শ্রমিকের দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে এডিবির বিকল্প নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমাদের বেকারত্ব যেমন আছে, তেমনি দক্ষ জনশক্তিরও অভাব আছে। উৎপাদনের ক্ষেত্রে এখন উদ্ভাবনী দক্ষতা অর্জনে গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে।

সর্বশেষ খবর