বুধবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

টেস্টের নামে বাণিজ্যের ফাঁদ

দামি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি, চিকিৎসকদের দেওয়া যত টেস্ট তত কমিশন, নজরদারির প্রস্তাব বিশেষজ্ঞদের

সাঈদুর রহমান রিমন

বছরে অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ নামিদামি হাসপাতালগুলো রমরমা টেস্ট বাণিজ্য ফেঁদে বসেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা ফির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্য তালিকা প্রদর্শনে উচ্চ আদালতের দেওয়া নির্দেশও মানছে না কেউ। প্রতিষ্ঠানভেদে একই টেস্টের মূল্য আদায় করা হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন। ইচ্ছামাফিক ফি নির্ধারণ করে সে টাকা পরিশোধেও রোগীকে বাধ্য করা হচ্ছে। কমিশন সুবিধার লোভে একশ্রেণির ডাক্তারও এখন ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি সেন্টারনির্ভর চিকিৎসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। চড়া মূল্যের প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় অসংখ্য পরীক্ষার চাপে রোগীরা হচ্ছেন সর্বস্বান্ত। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ট্যাক্স ও ভ্যাট ফাঁকিরও অভিযোগ রয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিলের সঙ্গে ভ্যাটের হিসাব সংযোজন থাকলে ভ্যাট ফাঁকি বন্ধ করা সহজ হতো বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এ বিষয়ে আগ্রহ নেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর। চিকিৎসকরা যত বেশি টেস্ট লিখে দেন তাদের কমিশনও তত বাড়ে। পাঁচ তারকা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে যা খুশি তা করছে।

এদিকে, রোগীদের সঙ্গে প্রতারণামূলক কারসাজিতে অতিরিক্ত সেবা ফি আদায় এবং সরকারি ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। সংশ্লিষ্ট একাধিক টিম রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি সেন্টারে ভ্যাট ফাঁকির প্রক্রিয়া চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেবে। এ ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্টের নিয়মিত অভিযানসহ রাজস্ব ফাঁকিসংক্রান্ত মামলার মুখোমুখি করা হবে প্রতিষ্ঠান-মালিকদের। সচেতন মহল রাজস্ব বোর্ডের অভিযানের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনের নজরদারিও দাবি করেছে। টেস্টের নামে মাত্রাতিরিক্ত অর্থ আদায় এখন চিকিৎসা ক্ষেত্রের প্রধান বাণিজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপত্র প্রদানকারী চিকিৎসক ৩০ থেকে ৬০ ভাগ পর্যন্ত কমিশন পান। এ কমিশনের লোভেই একশ্রেণির ডাক্তার রীতিমতো রোগীদের জিম্মি করেই চিকিৎসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে সর্বত্রই গড়ে উঠেছে ডাক্তার-ব্যবসায়ী-টেকনিশিয়ানদের সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট।

এর ভিত্তিতেই সারা দেশে নামে-বেনামে অননুমোদিত ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি সেন্টার গড়ে উঠছে। সাইনবোর্ডসর্বস্ব এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মনীতির বালাই নেই, হাতুড়ে টেকনিশিয়ান দিয়েই চালানো হয় রোগ নির্ণয়ের কাজ। একই সমস্যায় একাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভিন্ন ভিন্ন রিপোর্ট পাওয়ার নজিরও রয়েছে অনেক। এসব রিপোর্ট নিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হুমকি-ধমকি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কড়া নোটিস, নজরদারির নানা ঘোষণার পরও থামছে না ডাক্তারদের টেস্ট-বাণিজ্য। ‘যত টেস্ট তত টাকা’ নীতিতেই চলছে একশ্রেণির ডাক্তারের অর্থ উপার্জনের বেপরোয়া কর্মকা । এমন কর্মকা-ে পিছিয়ে নেই সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররাও। অধিকাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা সরকারি হাসপাতালে করা সম্ভব হলেও ডাক্তাররা রোগীদের পাঠিয়ে দেন হাসপাতালের আশপাশের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয়। কোনো কোনো ডাক্তারের আবার এসব ডয়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকানা রয়েছে বলেও জানা গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, কমিশনের লোভে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বেশির ভাগ সরকারি হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল বিভাগটিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে দেওয়া হয় না। এখানে সবচেয়ে দামি আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হলেও অজ্ঞাত কারণে দ্রুততম সময়েই সেগুলো অকেজো করে ফেলে রাখা হয়।

মনগড়া ফিতে রোগীরা সর্বস্বান্ত : বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় রোগীদের থেকে মাত্রাতিরিক্ত ফি আদায় কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। খেয়ালখুশিমতো বাড়ানো হচ্ছে সেবা ফি। চিকিৎসার নামে নানা কৌশলে রোগী ও তার স্বজনদের পকেট খালি করেও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ক্ষান্ত হচ্ছে না, উপরন্তু রোগীকে বন্দী রেখে বা রোগীর লাশ জিম্মি করেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া মূল্য তালিকা মানছে না রাজধানীর কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে নিজস্ব মূল্য তালিকা। মনগড়া এ মূল্য তালিকা অনুযায়ী টেস্টের টাকা পরিশোধ করে সর্বস্বান্ত হয়ে চিকিৎসা না নিয়েই বাসায় ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির রোগীরা। আবার বেশি টাকা দিয়ে টেস্ট করিয়েও সঠিক রোগ নির্ণয়ের নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। এসবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্বশীল বিভাগটি অজ্ঞাত কারণে বরাবরই চরম উদাসীন। ডাক্তাররা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সরবরাহ করা স্লিপে টিক মার্ক দিয়ে দেন কোন কোন টেস্ট করাতে হবে। রোগী নিজের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেই টেস্ট করালে ডাক্তার ওই রিপোর্ট গ্রহণ করেন না। ভুক্তভোগী রোগী ও তার স্বজনরা জানিয়েছেন, একই পরীক্ষার মূল্য হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারভেদে ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় আরও বেশি বিভ্রান্তির শিকার হতে হয়। একটি আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষার ফি যেখানে সব মেডিকেলে ১১০ থেকে ২৫০ টাকা, একই পরীক্ষা দামি হাসপাতালে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। ভুক্তভোগী আনিসুর রহমান বলেন, ‘একেক জায়গায় একেক রকম ফি দেখে আমি বিপর্যস্ত। কোথায় কাকে কত টাকা দেব তার সিদ্ধান্ত না নিতে পেরে আম্মার আলট্রাসনোগ্রাম করানোর জন্য আবার ঢাকা মেডিকেলের লাইনেই দাঁড়িয়েছি। দেরি হলেও এখানেই কম টাকায় পরীক্ষা করাতে পারব এটা নিশ্চিত।’ অভিযোগ আছে, বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানই সরকারের নির্দেশনা মানছে না। এসব বেপরোয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোনো ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। এতে প্রতিদিনই হাজার হাজার রোগীর কাছ থেকে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো রোগ নির্ণয়ের বড় অঙ্কের অর্থ আদায় করছে।

মানা হচ্ছে না উচ্চ আদালতের আদেশও : বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্য তালিকা জনসমাগমস্থলে (পাবলিক প্লেস) প্রদর্শনে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। গত বছর ২৪ জুলাই বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। একই সঙ্গে রুলও জারি করেছিল আদালত। আদেশে বলা হয়, দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরি এবং বাস্তবায়নের জন্য ৬০ দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে। পরে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি আরেকটি আদেশে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্য তালিকা নির্ধারণ এবং আইন অনুসারে সে তালিকা প্রদর্শনে আদালতের দেওয়া নির্দেশনা কত দূর বাস্তবায়ন হয়েছে, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘প্রথমে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে হলা হলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আবেদনে সেই সময় ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে গবেষক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যসেবার সামগ্রিক অবস্থা স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুর্বলতার কারণেই হয়েছে। যেভাবে দেশে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক গড়ে উঠেছে তাতে বড় কিছু ক্লিনিক ছাড়া অন্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় গিয়ে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে খুব অল্পসংখ্যকই মানসম্মত সেবা দিতে পারছে। আর রোগীর জন্য এ অবস্থা ক্ষতিকর। এ অবস্থায় রাষ্ট্রের দুর্নীতি অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব মানহীন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিকিৎসাসেবার অনুমতি দেওয়া হলেও এদের নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসক। আর ঘন ঘন মানহীন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদনের ফলে রোগীরাও প্রতারিত হচ্ছেন।’

এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় রোগীদের জিম্মি করে যে প্রতারণা বাণিজ্য হচ্ছে তা অপরাধমূলক কাজ। রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের মাধ্যমে তারা অন্যায় করছেন। আমি মনে করি যারা এ অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত তারা সবাই চিহ্নিত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকা  চলতেই থাকবে। স্বাস্থ্যসেবা অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। তার পরও দেশে রোগীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। এ অন্যায়ের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিলেই এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব। আবার রোগীদেরও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও দুর্নীতি দমন কমিশনকেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ে আরও উদ্যোগী হতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থার মানুষদেরও এ ব্যাপারে সক্রিয় হতে হবে।’ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী বলেন, ‘বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুর্নীতি কমাতে এসব চিকিৎসা কেন্দ্রে সরকার নির্ধারিত সেবামূল্য প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। আর এটি কেউ অমান্য করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি হাসপাতালগুলোয় যন্ত্রপাতি অচল করে রাখা হয় আবার এসব যন্ত্রপাতি পরিচালনা করার লোকের অভাব আছে। এ পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য স্ব স্ব হাসপাতালের পরিচালককে সক্রিয় হতে হবে।’ এ বিষয়ে শুল্ক মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেটের কমিশনার ড. মইনুল খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বেসরকারি চিকিৎসাসেবা নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ আছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের জোর নজরদারিও আছে।’ জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দেশে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা কম নয়। বলা যায়, রাজধানীসহ সারা দেশে অনেকটা ব্যাঙের ছাতার মতো এ ধরনের চিকিৎসা কেন্দ্র গজিয়ে উঠেছে। দেখা যাচ্ছে সরকারি হাসপাতালগুলোর সংখ্যা কম হওয়ায় এবং এই চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোয় মেডিকেল সেবা অপ্রতুল হওয়ায় সাধারণ রোগীরা নানা রকমের রোগবালাই নিয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই এসব চিকিৎসা কেন্দ্রে ভিড় করছেন। আর এ সুযোগে এসব চিকিৎসা কেন্দ্রের মালিক ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা রোগীদের অপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর নামে তাদের সঙ্গে প্রতারণামূলক বাণিজ্য করছেন।’ তিনি বলেন, ‘অনেক চিকিৎসক চিকিৎসাপত্রে নির্দিষ্ট একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু এমনটি হওয়ার কথা নয়। একজন রোগী চিকিৎসার জন্য নিজ প্রয়োজন অনুযায়ী স্বাধীনভাবে যে কোনো প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা করাতে পারবেন। কিন্তু ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও অসাধু কিছু চিকিৎসকের খপ্পরে পড়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।’ ড. জিনাত হুদা আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র অসাধু ব্যবসায়ীদের এ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের চিকিৎসা কেন্দ্রের একটি তালিকা তৈরি করে তার মনিটরিং করতে পারে। এমনকি এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট আইন ও বিধিনিষেধ মেনে পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। আবার এ প্রতিষ্ঠানগুলো মাসে বা বছরে যে পরিমাণ অর্থ আয় করছে তার একটি নির্দিষ্ট অংশ সরকারকে বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হবে। এতে সরকার এ খাত থেকে কাক্সিক্ষত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে না।’

সর্বশেষ খবর